ফরয, ওয়াজিব, সুন্নাত, মোস্তাহাব, নফল, হালাল, হারাম, মাকরূহ ও মোবাহ্ কি এবং কাকে বলে?

Follow Our Official Facebook Page For New Updates


Join our Telegram Channel!

ফরয, ওয়াজিব, সুন্নাত, মোস্তাহাব, নফল, হালাল, মাকরূহ ও মোবাহ্ কি এবং কাকে বলে? (Faraj, Wajib, Sunnat, Mustahab, Nafal, Halal, Haram, Makrooh and Mobah and what are they called?)


ফরয, ওয়াজিব, সুন্নাত, মোস্তাহাব, নফল, হালাল, মাকরূহ ও মোবাহ্ কি এবং কাকে বলে?

 بسم الله الرحمن الرحيم 

نحمده ونصلى على رسوله الكريمة

আল্লাহ্ তায়ালা ও তাঁহার নবী হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ছাল্লামের আদেশ ও নিষেধকে শরীয়ত বলা হয়। শরীয়ত পালনের নামই ইবাদত । কোরান শরীফ ও হাদীছ শরীফের মূল সূত্রগুলির ব্যাখ্যার নামই ফেকাহ্। এই ফেকাহ্ দ্বারাই মুসলমানদের দৈনন্দিন জীবন যাপন হইয়া থাকে। এই ফেকাহ্ প্রধানতঃ চারি ইমামের হস্তে চরম উন্নতি লাভ করিয়াছিল; এবং তাহাদের প্রত্যেকের স্ব স্ব মতানুযায়ী চারি ময্হাব সৃষ্টি হইয়াছে। এই চারি ময্হাবের নাম ইমামগণের নামানুসারে হইয়াছে। ইমাম আবু হানিফা (রঃ) এর নামানুসারে হানাফী, ইমাম শাফেয়ী (রঃ) এর নামানুসারে শাফেয়ী, ইমাম মালেক (রঃ) এর নামানুসারে মালেকী এবং ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রঃ) এর নামানুসারে হাম্বলী ময্হাব গঠিত হইয়াছে। আমরা বাংলাদেশের প্রায় সকল মুসলমানই হানাফী ময্হাব অনুসরণ করিয়া চলি।

চারি ময্হাবের ইমামগণ কোরান শরীফ ও হাদিছ শরীফ হইতে কাজের গুরুত্ববোধে নিম্নলিখিত নীতিগুলি নির্ধারণ করিয়াছেন :—

ফরয কি? ফরয কাকে বলে?

শরীয়তের বিধানানুসারে যে সকল বিষয় কোরআন ও সুন্নাহর অকাট্য প্রমাণ দ্বারা নির্ধারিত হইয়াছে এবং অবশ্যই পালন করিতে হইবে উহাকে ফরয বলে। ফরয পালন না করিলে কবীরা গুনাহ্ হয় এবং অস্বীকার করিলে কাফের হয়।

ফরয কত প্রকার ও কি কি?

ফরয দুই প্রকারঃ 

১। ফরযে আইন ও 

২। ফরযে কেফায়া। 

ফরযে আইন পালন করা প্রত্যেক মুসলমানের উপর বাধ্যতামূলক। যেমন: নামাজ, রোযা, হজ্ব, যাকাত ও ঈমান।

ফরযে কেফায়াও প্রত্যেক মুসলমানের উপর বাধ্যতামূলক কর্তব্য কাজ। কোন একজন বা কয়েকজনে মিলিয়া এই কাজ পালন করিলে বাকি সকলেই এই ফরয পালনের দায়িত্ব হইতে রেহাই পায়। কিন্তু কেহই ইহা পালন না করিলে সকল মুসলমানই কবীরা গুনাহের ভাগী হইবে। যথাঃ জিহাদ, ইসলাম প্রচার, মৃত ব্যক্তির জানাযার নামাজ, ন্যায়ের আদেশ ও অন্যায়ের নিষেধ ইত্যাদি।

ওয়াজিব কি ওয়াজিব কাকে বলে?

যে সকল শরীয়ত বিধান অস্পষ্ট প্রমাণ দ্বারা প্রমাণিত হইলেও অপরিহার্য্য বলিয়া নির্ধারিত হইয়াছে, উহাকে ওয়াজিব বলে।

ওয়াজিব কাজ সম্পাদন না করিলে কবীরা গুনাহ্ হয়। ফরযের ন্যায় ইহাও অবশ্য পালনীয়। যেমন : ঈদুলফিতর, ঈদুলআয্হার নামাজ ও বিতরের নামাজ ইত্যাদি। (ওয়াজিব কাকে বলে উদাহরণ সহ লেখ)

সুন্নত কি? সুন্নাত কাকে বলে?

সুন্নত এমন এক কৰ্ত্তব্য কাজ যাহা করিবার জন্য হযরত রসুলে করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াছাল্লাম তাকিদ দিয়াছেন এবং নিজে সদা সর্বদা তাহা করিয়াছেন। ইহাকে সুন্নতে মোয়াক্কাদাহ্ বলা হইয়া থাকে। যেমন :— ফজরের দুই রাকাত সুন্নত নামাজ, যোহরের ফরয নামাজের পূর্বে ৪ রাকাত ও পরে ২ রাকাত সুন্নত নামাজ, মাগরিবের ফরয নামাজের পর ২ রাকাত সুন্নত নামাজ এবং ইশার ফরয নামাজের পর ২ রাকাত সুন্নত নামাজ ইত্যাদি।

মোস্তাহাব বা সুন্নতে যায়েদাহ্ কি এবং কাকে বলে?

যে সকল কাজ হযরত রসূলে করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ছাল্লাম কোন কোন সময় করিয়াছেন আবার কোন কোন সময় ত্যাগ করিয়াছেন তাহাকে মোস্তাহাব বা সুন্নতে যায়েদাহ্ বলা হয়। মোস্তাহাব কাজ করিলে পূণ্য লাভ হয় কিন্তু না করিলে কোন দোষ বা গুনাহ্ হয় না। যথাঃ আছর ও ইশার নামাজের ফরযের পূর্বে চার রাকাত সুন্নত নামাজ।

নফল কি এবং কাকে বলে?

ইহা অতিরিক্ত ইচ্ছাকৃত কার্য্য। ইহা হযরত ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ছাল্লাম মাঝে মাঝে করিয়াছেন। ইহা করিলে ছাওয়াব আছে, না করিলে কোন গুনাহ্ নাই। “নফল ইবাদতের দ্বারাই মানুষ আল্লাহ্ তায়ালার নৈকট্য লাভ করে”। ইহা পবিত্র হাদীছ শরীফে উল্লেখ আছে।

পবিত্র হাদীছ শরীফে আরও আছে— “যে নফল এবাদত প্রত্যেক দিন করা হয়, তাহা আল্লাহ্ তায়ালার নিকট অধিক পছন্দনীয়।”

হারাম কি এবং কাকে বলে?

শরীয়তের নিষিদ্ধ কাজগুলিকে তিন ভাগে বিভক্ত করা হইয়াছে :— (১) হারাম (২) মকরূহ্ তাহরীম (৩) মকরূহ্ তানযীহ্।

(১) হারাম - কোরান ও হাদীছের নিষেধ অনুযায়ী যে সকল কাজ অবশ্যই ত্যাগ করিতে হয় এবং নিঃসন্দেহে অবৈধ তাহাকে হারাম বলে। যথাঃ — নরহত্যা, চুরি, ডাকাতি, মিথ্যা বলা, গীবত করা, মৃত জানওয়ারের গোশত বা শুকরের গোশত খাওয়া, মদ-শরাব পান করা এবং সুদ ও ঘুষ গ্রহণ ইত্যাদি। গান-বাজনা এবং বর্তমান যুগের কাওয়ালী ও শরীয়ত-মা'রেফাতের গান শ্রবণ করাও হারাম। গান-বাজনা শুনিলে হাশরের দিন সীসা গলাইয়া কানে ঢালিয়া দিবে।

(২) মকরূহ্ তাহরীম —সুন্নতে মোয়াক্কাদাহ্ যেমন অবশ্য পালন করিতে হইবে এবং অস্বীকার করা যাইবে না, তদ্রূপ মরূহ তাহ্রীমকে অবশ্যই বর্জন করিতে হইবে এবং উহাকে জায়েয বলা যাইবে না। যেমন:- পশ্চিম (কেবলা) দিক হইয়া প্রস্রাব করা।

(৩) মকরূহ্ তানযীহ্ — যে সকল কাজ নিষিদ্ধ হওয়া সম্বন্ধে কোরান ও হাদীছে প্রমাণের যথেষ্ট অভাব আছে কিন্তু পরোক্ষভাবে প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহাদিগকে মরূহ তানযীহ্ বলা হয়। ইহা না করা বাঞ্ছনীয় ।

হালাল কি এবং কাকে বলে?

কোরান ও হাদীছে যে সকল কাজ বা খাদ্য-দ্রব্য বৈধ হওয়া সম্বন্ধে নির্দেশ রহিয়াছে এবং প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অবৈধ বলিয়া কোন প্রমাণ নাই তাহাকে হালাল বলে।

মোবাহ্ কি এবং কাকে বলে?

যে সকল কাজ করা বা না করার পক্ষে শরীয়তে কোন আদেশ বা নিষেধ নাই, তাহাকে মোবাহ্ বলে। অর্থাৎ ইহা করিলেও গুনাহ্ হয় না; না করিলেও গুনাহ্ হয় না।


Keyword: ওয়াজিব কাকে বলে উদাহরণ সহ লেখ, ওয়াজিব ও ফরজের মধ্যে পার্থক্য, ওয়াজিব শব্দের অর্থ কী, নফল কাকে বলে

নিত্য নতুন সকল আপডেটের জন্য জয়েন করুন

Telegram Group Join Now
Our Facebook Page Join Now
Class 8 Facebook Study Group Join Now
Class 7 Facebook Study Group Join Now
Class 6 Facebook Study Group Join Now

Post a Comment