১ম অধ্যায়: রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ও সংঘটনসমূহ (PDF) - রাষ্ট্রবিজ্ঞান
- রাষ্ট্র The State
- রাষ্ট্রের সংজ্ঞা
- রাষ্ট্রের উপাদান বা বৈশিষ্ট্যসমূহ
- রাষ্ট্রের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যসমূহ আধুনিক রাষ্ট্রের কার্যালবলী
- সমাজ, সম্প্রদায় ও সংঘ
- সমাজ
- সম্প্রদায়
- সংঘ বা সমিতি
- রাষ্ট্র ও সমাজ
- রাষ্ট্র ও ব্যক্তি
- রাষ্ট্র ও সরকার রাষ্ট্র ও সংঘ
- রাষ্ট্রের উৎপত্তি সম্পর্কিত মতবাদসমূহ
- বিধাতার সৃষ্টিমূলক বা ঐশ্বরিক মতবাদ
- বিধাতার সৃষ্টিমূলক মতবাদের সমর্থন
- বিধাতার সৃষ্টিমূলক মতবাদের সমালোচনা
- বিধাতার সৃষ্টিমূলক মতবাদের গুরুত্ব
- বল বা শক্তি প্রয়োগ মতবাদ
- বলপ্রয়োগ মতবাদের সমর্থন
- বলপ্রয়োগ মতবাদের সমালোচনা
- বল প্রয়োগ মতবাদের গুরুত্ব
- পিতৃতান্ত্রিক ও মাতৃতান্ত্রিক মতবাদ
- পিতৃতান্ত্রিক ও মাতৃতান্ত্রিক মতবাদের সমালোচনা
- সামাজিক চুক্তি মতবাদ
- সামাজিক চুক্তি মতবাদের সমর্থন
- সামাজিক চুক্তি মতবাদের সমালোচনা
- সামাজিক চুক্তি মতবাদের গুরুত্ব
- ঐতিহাসিক বা বিবর্তনমূলক মতবাদ
- Part- A Brief Questions (অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন)
- D Part-B Short Questions (সংক্ষিপ্ত প্রশ্নাবলি)
- Part-C Broad Questions (রচনামূলক প্রশ্নাবলি)
নমুনা:
রাষ্ট্রের সংজ্ঞা (Definition of State):
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হলো রাষ্ট্র। রাষ্ট্র পৃথিবীর বহুল আলোচিত বিষয়গুলোর মধ্যে অন্যতম। রাষ্ট্র হচ্ছে নাগরিক জীবনের অন্যতম সংস্থা। তাই রাষ্ট্রের সংজ্ঞা সম্পর্কে ধারণা থাকা একান্ত আবশ্যক ।
(ক) প্রচলিত অর্থঃ
( Nation) শব্দগুলোর সমার্থক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এদের প্রত্যেকটি একটি স্বতন্ত্র অর্থ বহন করে। তাই রাষ্ট্রবিজ্ঞানের 'রাষ্ট্র' (State) শব্দের বিশেষ বৈজ্ঞানিক অর্থ রয়েছে।
(খ) আধুনিক বা মূল সংজ্ঞা:
আধুনিক রাষ্ট্র জাতি রাষ্ট্র (Nation State) এবং একটি সার্বভৌম সংঘ (Sovereign Association)। আধুনিক রাষ্ট্রদর্শনের অন্যতম দিকপাল ম্যাকিয়াভেলী (Machiavelli) সর্বপ্রথম তাঁর রাজনৈতিক দর্শনে রাষ্ট্র কথাটির উল্লেখ করেন।
(গ) প্রামাণ্য সংজ্ঞা:
রাষ্ট্রের সংজ্ঞা নির্ধারণ খুব সহজ নয়। বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বিভিন্নভাবে রাষ্ট্রের সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। তথাপি তাঁদের মধ্যে বিতর্কের শেষ নেই। তাই রাষ্ট্রের কোন একক সংজ্ঞা নেই। নিচে রাষ্ট্র সম্পর্কে কয়েকটি প্রামাণ্য সংজ্ঞা দেয়া হলো :
→ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আদি গুরু এরিস্টটল ((Aristotle ) বলেন, "The state a union of families and villages having for its end and perfect and self sufficmg life." অর্থাৎ রাষ্ট্র হলো কতিপয় পরিবার ও গ্রামের সমষ্টি যার উদ্দেশ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ জীবন ।
→ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন (Woodrow Wilson)-এর মতে,
"A state is a people organized for law within a definite territory." অর্থাৎ
রাষ্ট্র হলো কোন নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সংগঠিত এক জনসমষ্টি ।
→ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ব্লুন্টসলি (Blunschli) বলেছেন, "State is the politically organized people of a definite territory." অর্থাৎ একটি নির্দিষ্ট ভূখণ্ডের আওতাধীনে রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত জনসমাজই রাষ্ট্র।
→ অধ্যাপক ওয়াজবি (Wasby) বলেন, "The state is a collection of people having organized government and possessing autonomy with respect to other such units. " অর্থাৎ রাষ্ট্র হলো কোন ভূখণ্ডে বসবাসকারী এমন জনসমষ্টি যার সুসংগঠিত সরকার রয়েছে এবং যা অন্যান্য রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণমুক্ত ।
→ অধ্যাপক বার্জেস ( Burgess ) -এর মতে, "State is a particular portion of mankind viewed as an organized unit." অর্থাৎ মানব জাতির কোন একটির বিশেষ অংশ সংঘবদ্ধ হয়ে বাস করলে রাষ্ট্র গঠিত হয় ।
→ সমাজবিজ্ঞানী অগবার্ন ও নিমকফ (Ogburn and Nimkoff) উল্লেখ করেছেন, "The state is an organization which rules by means of a supreme government over a definite territory." অর্থাৎ রাষ্ট্র হলো একটি সংগঠন যা নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে সার্বভৌম সরকার কর্তৃক শাসিত । রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ও সংঘটনসমূহ
→ ব্রিউস্টার (Brewster)-এর ভাষায়, "State is an organized body of people, occupying a definite territory and possessed of an independent or sovereign government." অর্থাৎ রাষ্ট্র এমন এক সংগঠিত জনসমষ্টি, যা কোন সুনির্দিষ্ট ভূখণ্ডের রাষ্ট্রের উপাদান বা বৈশিষ্ট্যসমূহ Elements or Characteristics of the State.
রাষ্ট্রের উপাদান বা বৈশিষ্টসমূহ
রাষ্ট্র সম্পর্কিত রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের সংজ্ঞাসমূহ বিশ্লেষণ করলে রাষ্ট্রের ৪টি উপাদান বা বৈশিষ্ট্য দেখতে পাওয়া যায়। এগুলো হলো- (১) জনসমষ্টি, (২) নির্দিষ্ট ভূখণ্ড, (৩) সরকার এবং (৪) সার্বভৌমত্ব। এ ৪টি বৈশিষ্ট্যের একত্র সমাবেশ ঘটলেই একটি রাষ্ট্র গঠিত হয়। অর্থাৎ যে কোন একটির অভাবে কোন সংগঠন রাষ্ট্র পদবাচ্য হবে না। তাই রাষ্ট্র গঠনে এদের প্রত্যেকটি একান্ত প্রয়োজনীয়। রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ও সংঘটনসমূহ
রাষ্ট্রের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যসমূহ (The Ends and Objectives of the State)
রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য নির্ধারণ করা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের একটি জটিল সমস্যা। রাষ্ট্র কি লক্ষ্য অর্জনের উপায়, না নিজেই চরম লক্ষ্য- এ প্রশ্নের সর্বসম্মত উত্তর আজও পাওয়া যায় নি।
রাষ্ট্রের প্রকৃতির উপর তার লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য নির্ভর করে। রাষ্ট্রের প্রকৃতিকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মধ্যে যেমন বাদানুবাদের অন্ত নেই, তেমনি রাষ্ট্রের লক্ষ্য বা উদ্দেশ্যকে কেন্দ্র করেও তাঁদের মধ্যে যথেষ্ট মতপার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ও সংঘটনসমূহ
তাই রাষ্ট্রের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে যুগে যুগে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ বিভিন্ন মতবাদ ব্যক্ত করে গেছেন। এক দল বলেছেন যে, রাষ্ট্রের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য জনগণের কল্যাণ ও উন্নততর জীবনব্যবস্থার নিশ্চয়তা দান।
আবার এক দল বলেছেন যে, রাষ্ট্রই সব, রাষ্ট্রই মূল জনগণই রাষ্ট্রের বেদিমূলে আত্মোৎসর্গ করবে। যা হোক, রাষ্ট্রের মূল উদ্দেশ্য জনগণের সঠিক কল্যাণ সাধন করা। রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর ধারণা নিচে প্রদত্ত হলো :
(ক) প্রাচীন গ্রিক চিন্তাবিদদের ধারণাঃ
প্রাচীন গ্রিক চিন্তাবিদ প্লেটো (Plato) এবং এরিস্টটল (Aristotle) রাষ্ট্রকে শ্রেষ্ঠতম মানবীয় সংগঠন বলে বর্ণনা করেছেন। তাঁদের মতে, রাষ্ট্র মানবজীবনের চরম পরিণতি । রাষ্ট্র ছাড়া মানবজীবন অসম্পূর্ণ। মানবজীবন রক্ষার জন্যই রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়েছে। একমাত্র রাষ্ট্রে বসবাসের মধ্য দিয়েই মানবজীবন পূর্ণতা লাভ করে।
সুতরাং মানব সমাজের সামাজিক, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক জীবনের পরিপূর্ণতা আনয়নের নিমিত্ত রাষ্ট্র এসেছে। তাই রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য কেবল জনগণের জীবন রক্ষা করা নয়, বরং সুন্দর ও মহত্তর জীবন গঠনের নিশ্চয়তা বিধান করাই এর প্রকৃত উদ্দেশ্য। এরিস্টটল ( Aristotle ) বলেন, "The state exists to promote good life. "
(খ) রোমান দার্শনিকদের ধারণা:
রোমান দার্শনিকদের মতে, মানব সমাজের কল্যাণের জন্য রাষ্ট্র ছাড়া অন্য কোন সংগঠনের প্রয়োজনীয়তা নেই। এঁদের মতে, রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য মানব সমাজের বিভিন্নমুখী জীবনযাত্রা নির্বাহ করা। রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ও সংঘটনসমূহ
(গ) মধ্যযুগীয় চিন্তাবিদদের ধারণা:
মধ্যযুগের চিন্তাবিদগণের মতে, রাষ্ট্র মানবীয় সংগঠন নয়, বরং দৈবপ্রাপ্ত সংগঠন। মানব সমাজের পার্থিব এবং পারলৌকিক কল্যাণ সাধনের নিমিত্ত সৃষ্টিকর্তা রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার জন্ম দিয়েছেন। রাষ্ট্রের অন্যতম উদ্দেশ্য মানব সমাজের পাপমোচন করে পারলৌকিক কল্যাণ সুনিশ্চিত করা। রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ও সংঘটনসমূহ
(ঘ) আদর্শবাদী দার্শনিকদের ধারণা:
আদর্শবাদী দার্শনিকগণ রাষ্ট্রকে একটি মহিমান্বিত প্রতিষ্ঠান বলে কল্পনা করে “রাষ্ট্রকে রাষ্ট্রের চরম লক্ষ্য” (The state is an end in itself) বলে বর্ণনা করেছেন। এঁদের মধ্যে ছিলেন- ফিকটে, হেগেল, ব্রাডলে, টি. এইচ. গ্রীন, বোসাকোয়েট প্রমুখ দার্শনিক। তাঁদের মাধ্যমে রাষ্ট্র নিজেই 'চরম লক্ষ্য' হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। যেমন :
→ ফিকটে রাষ্ট্রের গৌরবময় ভূমিকা বর্ণনা করেছেন এবং রাষ্ট্রের বেদীমূলে ব্যক্তিকে উৎসর্গ করেছেন।
→ হেগেল (Hegel) রাষ্ট্রের মহিমা কীর্তন করতে গিয়ে বলেছেন, “রাষ্ট্র স্বাধীনতার মূর্ত প্রতীক এবং একমাত্র রাষ্ট্রের মাধ্যমে মানুষ তার জীবনের মূল্য লাভ করে ।" তিনি রাষ্ট্রকে ধূলির ধরনীতে ঈশ্বরের জয়যাত্রা (March of God on Earth) বলে আখ্যায়িত করেছেন। রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ও সংঘটনসমূহ
আধুনিক রাষ্ট্রের কার্যাবলি (Functions of the Modern State)
রাষ্ট্র মানুষের প্রয়োজনে গড়ে উঠেছে। সুতরাং মানুষের প্রয়োজন পূরণের জন্য রাষ্ট্রকে বহুবিধ কাজ সম্পাদন করতে হয়। কিন্তু রাষ্ট্রের কাজ কি হওয়া উচিত এবং রাষ্ট্র কর্তৃক কি কি কাজ সম্পাদিত হবে, তা নিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মধ্যে যথেষ্ট মতবিরোধ রয়েছে। অতীতে রাষ্ট্রের আদর্শ ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিল।
ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদীদের মতে, রাষ্ট্র একটি প্রয়োজনীয় অথচ ক্ষতিকর প্রতিষ্ঠান (State is a necessary evil)। সুতরাং রাষ্ট্র যত কম কাজ করবে ততই মঙ্গল। কিন্তু বর্তমানে যে পুরাতন দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটেছে আধুনিক রাষ্ট্রগুলো কিছু কিছু সমাজতন্ত্রের আদর্শ গ্রহণ করেছে। সমাজতন্ত্রবাদীদের মতে, জনসাধারণের মঙ্গলের জন্য সবকিছু রাষ্ট্রের মাধ্যমে সম্পন্ন হওয়াই কল্যাণকর।
অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা বজায় রাখা বহিঃশত্রুর আক্রমণ প্রতিহত করা ব্যতীত আধুনিক রাষ্ট্রগুলো হাজারো জনকল্যাণমূলক কাজে লিপ্ত। এ প্রসঙ্গে জন স্টুয়ার্ট মিলের বক্তব্য প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেন, “রাষ্ট্রের কার্যাবলি নির্দিষ্ট করে দেয়া চলে না। বিভিন্ন রাষ্ট্রে তা বিভিন্ন হয়।”
অপরপক্ষে এও উল্লেখযোগ্য, আধুনিককালে রাষ্ট্রগুলো ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদ ও সমাজতন্ত্রবাদ –এ উভয়ের মধ্যবর্তী পথ দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে।
ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদের আদর্শ সম্পূর্ণরূপে পরিহার না করে এবং সমাজতন্ত্রবাদকে সম্পূর্ণরূপে গ্রহণ না করে তারা এক মধ্যম পন্থা অবলম্বন করছে বর্তমানে 'পুলিশী রাষ্ট্রের' (Police State) বদলে 'কল্যাণকর রাষ্ট্রের' (Welfare State) ধারণা দৃঢ়তর হচ্ছে। (অধ্যায় ১) রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ও সংঘটনসমূহ (PDF)
সমাজ, সম্প্রদায় ও সংঘ Society, Community, Association
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হলো রাষ্ট্র। রাষ্ট্রের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করাই এর প্রধান কাজ। কিন্তু রাষ্ট্র সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করতে হলে একে আরও কতকগুলো প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ধারণা থাকা একান্ত আবশ্যক। রাজনৈতিক জীবনে রাষ্ট্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও এর বাইরে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আছে যাদের সাথে মানুষের সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড় ও ঘনিষ্ঠ। কা
জেই রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনাকে যথাযথ, সুন্দর ও সম্পূর্ণ করার জন্য এ সকল প্রতিষ্ঠানাদির আলোচনাকে এর বিষয়বস্তুর অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। অধ্যাপক লাস্কি (Prof. Laski) বলেছেন, একমাত্র রাষ্ট্রের মধ্যেই মানুষের সামাজিক সম্পর্ক শেষ হয় নি।
মানুষের সামাজিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক সম্বন্ধে সঠিক আলোচনা করতে হলে অন্যান্য প্রতিষ্ঠান সম্বন্ধেও কিছু কিছু জানতে হবে। তাই বর্তমান রাষ্ট্র ছাড়াও সমাজ, সম্প্রদায়, বিভিন্ন সংঘ প্রভৃতি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিষয়বস্তুর অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। (অধ্যায় ১) রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ও সংঘটনসমূহ (PDF)
সমাজ Society
মানুষ সামাজিক জীব। সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস করাই মানুষের ধর্ম। আদিমকাল হতে মানুষ সমাজবদ্ধভাবে জীবন যাপন করে আসছে। সমাজ মানুষের সাধারণ উদ্দেশ্য সাধনের স্থান। মানুষের সংঘবদ্ধ জীবনের সূচনা ও ব্যাপ্তির অভিব্যক্তিই সমাজ।
কোন মানুষই নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করতে পারে না এবং নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করতেও চায় না। এ ক্ষেত্রে একত্রে বাস করার প্রবৃত্তি মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি।
সঙ্গবিলাসী মানুষ জীবনের প্রতি ধাপে মানুষের সঙ্গ কামনা করে। গ্রিক দার্শনিক এরিস্টটল (Aristotle) তাঁর 'Politics' গ্রন্থে বলেছেন যে, "Man is by nature a social and political aminal and a man who is not a member of a society is either a god or a beasts."
অর্থাৎ “মানুষ প্রকৃতিগতভাবে সামাজিক ও রাজনৈতিক জীব এবং যে সমাজে বাস করে না, সে হয় দেবতা না হয় পশু।” এ উক্তির স্পষ্ট বিশ্লেষণ হলো মানুষ সমাজে জন্ম নেয় এবং সে সমাজে জীবন অতিবাহিত করে। তাই সমাজের সাথে মানুষের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য।
(ক) সমাজের সংজ্ঞা (Definition of Society):
সমাজ এমন একটা প্রত্যয় যা ধরা যায় না, ছোঁয়া যায় না। এক কথায় যার কোন আকার নেই। আমরা সমাজকে উপলব্ধি করি মাত্র। তাই সমাজবিজ্ঞানীগণ নিজ নিজ উপলব্ধির উপর ভিত্তি করে সমাজের সংজ্ঞা দেবার চেষ্টা করেছেন। সমাজবিজ্ঞানীরা সমাজের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে সমাজকে ব্যাপক ও সংকীর্ণ অর্থে ব্যবহার করেছেন। রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ও সংঘটনসমূহ
ব্যাপক অর্থে সমাজ বলতে সমগ্র মানব জাতিকে বুঝান হয়েছে, অন্যদিকে ব্যাপক অর্থে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জনসমষ্টিকে এক একটি সমাজ হিসেবে চিত্রায়িত করা হয়েছে, সমাজবিজ্ঞানে সমাজ শব্দটি ল্যাটিন 'Socius' শব্দ থেকে ইংরেজি 'Society'-তে রূপান্তরিত হয়েছে।
সাধারণ অর্থে দুই বা ততোধিক ব্যক্তির একই উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট ভৌগোলিক এলাকায় বসবাস করাকে সমাজ বলে। প্রকৃতপক্ষে সমাজ বলতে কতকগুলো অনুভূতিসম্পন্ন একই জাতীয় জীবনের।
নিত্য নতুন সকল আপডেটের জন্য জয়েন করুন
If any objections to our content, please email us directly: helptrick24bd@gmail.com