প্রশ্ন॥ ইসলামি রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্যসমূহ কী? অথবা, ইসলামি রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্যগুলো উল্লেখ কর। অথবা, ইসলামি রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব আলোচনা কর।
ইসলামি রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্যসমূহ
উত্তর : ভূমিকা : ইসলামি রাষ্ট্রের আইন কুরআন ও সুন্নাহভিত্তিক আইন। আর কুরআন ও সুন্নাহভিত্তিক আইনের বুনিয়াদে ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত। ইসলামি রাষ্ট্রের বিধিবিধান আল্লাহর নির্দেশনাবলি। ইসলামি রাষ্ট্রের আইন-কানুন পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহর মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
ইসলামি রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্যসমূহ :
যেসব বৈশিষ্ট্যের আলোকে ইসলামি রাষ্ট্র পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয় সেসব বৈশিষ্ট্যকে ইসলামি রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য বলা হয়। ইসলামি রাষ্ট্র বুনিয়াদিভাবে আল্লাহর সার্বভৌমত্বকে মেনে নিবে। আল্লাহর সমকক্ষ কোনো ক্ষমতাবান নেই। তাঁর হুকুম পরিবর্তন করার ক্ষমতা কারো নেই।
ইসলামি রাষ্ট্র একটি আদর্শভিত্তিক রাষ্ট্র। ইসলামি রাষ্ট্র ব্যাপকভিত্তিক সর্বোত্তম কল্যাণরাষ্ট্র। ইসলামি রাষ্ট্রব্যবস্থার শাসক হবেন নির্বাচিত। জনগণের আস্থার উপর রাষ্ট্রপ্রধানের কার্যকাল ও স্থায়িত্ব নির্ভর করে। এ রাষ্ট্র মজলিশে শুরা'র ভিত্তিতে পরিচালিত হয়।
এ রাষ্ট্রের বায়তুল মাল ধনভাণ্ডার সহায় সম্পদ সবকিছুই জনগণের আমানত। ইসলামি রাষ্ট্রের শাসকগণ জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্বশীল থাকেন।
ইসলামি রাষ্ট্র সর্বাত্মক রাষ্ট্র হলেও গণতান্ত্রিক পন্থায় পরিচালিত হয়। উপসংহার উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, ইসলামি রাষ্ট্রে ব্যক্তি ও সমাজের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে ইসলামি শরীয়তের আওতায়ই পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকে।
ইসলামি রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে কুরআন, সুন্নাহ ও শুরার বুনিয়াদি নীতিমালার ভিত্তিতে পরিচালিত হয়, ফলে জনকল্যাণ নিশ্চিতকরণ সম্ভব হয়।
ইসলামি রাষ্ট্র নিয়ে আরো পড়ুন: ইসলামি রাষ্ট্রের বুনিয়াদি নীতিমালা
প্রশ্ন॥ ইসলামি রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব আলোচনা কর।
উত্তর : ভূমিকা : ইসলামি রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব কেবলমাত্র আল্লাহর। এ রাষ্ট্র বুনিয়াদিভাবে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে আল্লাহর সার্বভৌমত্বকে মেনে নিবে। ইসলামি রাষ্ট্রের সংবিধান কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের প্রতিনিধিকে অথবা জনগণকে সার্বভৌম ও নিরঙ্কুশ শক্তি হিসেবে গ্রহণ করবে না।
ইসলামি রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব :
পবিত্র কোরআন শরীফে বলা হয়েছে, সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী একমাত্র আল্লাহ তাআলা। তিনি যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন। তাঁর কার্যাবলি সম্পর্কে প্রশ্ন তোলার অধিকারও কারো নেই। তাঁর সমকক্ষ কোনো ক্ষমতাবান নেই। তাঁর হুকুম পরিবর্তন করার ক্ষমতা কারো নেই।
পবিত্র কুরআনে সূরা আল ইমরানে আরো বলা হয়েছে,
“বল, হে আল্লাহ! সকল মুলকের মালিক। তুমি যাকে ইচ্ছা রাষ্ট্র দান কর, আর যার কাছ থেকে ইচ্ছা রাষ্ট্র ক্ষমতা কেড়ে নাও। যাকে ইচ্ছা সমন্বিত কর। আর যাকে ইচ্ছা অপমানিত কর।”
সূরা আল ইউসুফের ৪০নং আয়াতে বলা হয়েছে,
“বস্তুত, সার্বভৌমত্বের কর্তৃক আল্লাহ ছাড়া আর কারো নেই।”
অন্যত্র বলা হয়েছে,
আকাশমণ্ডলি ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্ব আল্লাহরই।
আল কুরআনে আল্লাহর সার্বভৌমত্বের স্পষ্টতম ঘোষণা মেনে নিয়ে মদীনায় নব প্রতিষ্ঠিত ইসলামি রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের মালিকও ছিলেন আল্লাহ। আইন ও বিধানের মালিকও আল্লাহ তাআলা ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, আল্লাহর সার্বভৌমত্বই রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ইসলামি রাষ্ট্রের ভিত্তিমূল ছিল। ইসলামি রাষ্ট্রের আইন ও বিধানের মালিকও আল্লাহ তাআলা। আর ইসলামি রাষ্ট্রে আল্লাহ তাআলার সার্বভৌমত্ব ও প্রাধান্য মেনে নিয়ে সে মোতাবেক লক্ষ্যে পৌঁছার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হয়।
নিত্য নতুন সকল আপডেটের জন্য জয়েন করুন
If any objections to our content, please email us directly: helptrick24bd@gmail.com