১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের বৈশিষ্ট্যসমূহ

Follow Our Official Facebook Page For New Updates


Join our Telegram Channel!

প্রশ্ন ॥ ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা কর। অথবা, ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের বৈশিষ্ট্য কি কি?

Discuss the features of the Government of India Act, 1935.

১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের বৈশিষ্ট্যসমূহ

ভূমিকা : ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতীয় ইতিহাসে ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন এক উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। এ আইন ভারতীয় ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘায়িত আইন। কেননা ১৯১৯ সালের ভারত শাসন আইন এক রাজনৈতিক অস্থিরতা ও শাসনতান্ত্রিক জটিলতা সৃষ্টি করে। 

এই অবস্থা অবসান করার জন্য ১৯২৭ সালের সাইমন কমিশন ও কয়েক দফায় গোলটেবিল বৈঠকের আলোচনার পর ভারতীয় নেতাদের মতামতের ভিত্তিতে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন গৃহীত।

১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের বৈশিষ্ট্যসমূহ : 

নিম্নে ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা করা হলো : 

১. যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার গঠন : 

১৯৩৫ সালের আইনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার গঠন। ব্রিটিশ ভারতের প্রদেশসমূহ ও যোগদানে ইচ্ছুক এমন দেশীয় রাজ্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার গঠনের পরিকল্পনা করা হয়। 

২. প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন : 

সর্বভারতে প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা করা, ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এ আইনের মাধ্যমে প্রদেশগুলোতে দ্বৈতশাসনের পরিবর্তে প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের ব্যবস্থা করা হয়। 

এ আইনের মাধ্যমে সকল বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণমুক্ত হয়ে প্রাদেশিক সরকার কাজ করার অধিকার লাভ করে। ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের বৈশিষ্ট্যসমূহ

৩. দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট আইনসভা : 

১৯৩৫ সালের শাসন আইনের মাধ্যমে দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় আইনসভা সৃষ্টি করা হয়। উচ্চকক্ষের নাম রাষ্ট্রীয় সভা যার সদস্য সংখ্যা ২৬০ জন এবং এদের মেয়াদ ৯ বছর। অন্যদিকে, নিম্নকক্ষের না ব্যবস্থাপক সভা যার সদস্য সংখ্যা ৩৭৫ জন এবং এদের মেয়াদ ৫ বছর।

৪. দ্বৈতশাসন : 

১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো দ্বৈতশাসন প্রবর্তন। এ আইনের মাধ্যমে প্রদেশগুলোতে দ্বৈতশাসনের পরিবর্তে কেন্দ্রে দ্বৈতশাসনের ব্যবস্থা করা হয়। কেন্দ্রের শাসনকার্যকে সংরক্ষিত ও হস্তান্তরিত এই দুই ভাগে ভাগ করা হয়। ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের বৈশিষ্ট্যসমূহ

৫. ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ : 

১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ। এ আইনের মাধ্যমে দেশের শাসন সংক্রান্ত বিষয়সমূহ তিনভাগে ভাগ করা হয়েছিল। যথা: 

(ক) কেন্দ্রীয় বিষয়; 

(খ) প্রাদেশিক বিষয় ও 

(গ) যুগ্ম বিষয়। 

৬. দুষ্পরিবর্তনীয় : 

১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো দুষ্পরিবর্তনীয়। এ আইন পরিবর্তন করা দুষ্পরিবর্তনীয়। এ আইন পরিবর্তন, সংশোধন করার একমাত্র ক্ষমতার অধিকারী ছিল ব্রিটিশ পার্লামেন্ট।

৭. বার্মা পৃথকীকরণ : 

১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের মাধ্যমে বার্মাকে ভারত থেকে পৃথক করা হয়। ফলে বার্মানস স্বাধীনরূপে আত্মপ্রকাশ লাভ করে। ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের বৈশিষ্ট্যসমূহ

৮. নতুন প্রদেশ সৃষ্টি : 

১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের অন্যতম ধারা বা বৈশিষ্ট্য হলো নতুন প্রদেশ সৃষ্টি। উড়িষ্যা ও সিন্ধু নামে নতুন দুটি প্রদেশ এ আইনের মাধ্যমে সৃষ্টি করা হয় । 

৯. গভর্নর জেনারেল : 

১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের মাধ্যমে প্রত্যেক প্রদেশের একজন শাসনকর্তা হিসেবে গভর্নর জেনারেল নিয়োগ করা হয়। গভর্নর জেনারেল শাসনব্যবস্থার মধ্যমণি হিসেবে আবির্ভূত হয়। এমনকি তিনি স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতারও অধিকারী হন। ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের বৈশিষ্ট্যসমূহ

১০. ক্ষমতাহীন আইনসভা : 

১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো ক্ষমতাহীন আইনসভা। এ আইনের মাধ্যমে ভারতীয় আইন পরিষদগুলোর ক্ষমতা সীমিত করা হয়। 

ফলে ভারতীয় আইনসভাগুলো কোনো আইন প্রণয়ন করলে গভর্নর জেনারেল তা ভেটো প্রয়োগ করে বাতিল করে দিতো। ফলে আইন পরিষদগুলো অনেকটা ক্ষমতাহীন হয়ে পড়ে।

১১. জটিল প্রকৃতির সংবিধান : 

১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন বা সংবিধান ছিল অনেক জটিল প্রকৃতির। এ আইনে ৪১টি অংশ, ১০টি তালিকা ও ৩০০টি বিদ্যমান ছিল এবং এগুলোর বর্ণনা এমনভাবে সন্নিবেশ করা ছিল যা ছিল অনেক জটিল প্রকৃতির। ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের বৈশিষ্ট্যসমূহ

১২. যুক্তরাষ্ট্রীয় আদালত প্রতিষ্ঠা : 

১৯৩৫ সালে ভারত শাসন আইনের অন্যতম ধারা বা বৈশিষ্ট্য হলো যুক্তরাষ্ট্রীয় আদালত প্রতিষ্ঠা করা। এ আদালতের একজন প্রধান বিচারপতি ও দুইজন সাধারণ বিচারপতি নিয়ে আদালত প্রতিষ্ঠা করা হবে। এ আদালতের প্রধান দায়িত্ব ছিল আইনের ব্যাখ্যা দান করা।

১৩. মুসলমান প্রতিনিধি :

১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের মাধ্যমে মুসলমানদের জন্য পৃথক নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয়। এমনকি এ আইনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় আইন পরিষদে মুসলমানদের জন্য এক-তৃতীয়াংশ সদস্য গ্রহণের ব্যবস্থা করা হয়। ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের বৈশিষ্ট্যসমূহ

উপসংহার : 

উপরিউক্ত আলোচনার সাপেক্ষে আমরা বলতে পারি যে, ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের মাধ্যমে কিছুটা হলেও ভারতীয় রাজনৈতিক ও শাসনতান্ত্রিক অচলাবস্থার অবসান ঘটে। 

কেননা ভারতীয় ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘায়িত আইন হলো ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন। সর্বোপরি বলা যায় যে, এ আইনের উপর ভিত্তি করেই ভারতীয় স্বাধীনতার পথ প্রশস্ত হয়। ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের বৈশিষ্ট্যসমূহ, ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের বৈশিষ্ট্যসমূহ, ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের বৈশিষ্ট্যসমূহ,,১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের বৈশিষ্ট্যসমূহ

নিত্য নতুন সকল আপডেটের জন্য জয়েন করুন

Telegram Group Join Now
Our Facebook Page Join Now
Class 8 Facebook Study Group Join Now
Class 7 Facebook Study Group Join Now
Class 6 Facebook Study Group Join Now

Post a Comment