ভাষা আন্দোলন কাকে বলে? এবং ভাষা আন্দোলনের তাৎপর্য

Follow Our Official Facebook Page For New Updates


Join our Telegram Channel!

ভাষা আন্দোলন কি? অথবা, ভাষা আন্দোলন কাকে বলে? ভাষা আন্দোলনের তাৎপর্যসমূহ

ভাষা আন্দোলন এবং ভাষা আন্দোলনের তাৎপর্য

১৯৫২ সালে মাতৃভাষা বাংলার জন্য পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ যে আন্দোলন করেছিলেন, তাই ভাষা আন্দোলন নামে পরিচিত। 

পাকিস্তানি শাসকদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিবাদ হলো ভাষা আন্দোলন। বাঙালিরা বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে মাতৃভাষা হিসেবে বাংলার স্বীকৃতি লাভ করে। ভাষা আন্দোলনের সফলতা বাঙালিদের পরবর্তীকালের আন্দোলনের সাহস জুগিয়েছিলেন।

ভাষা আন্দোলন: 

পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ মাতৃভাষা হিসেবে বাংলাকে রক্ষা করার জন্য পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন করেন তা ভাষা আন্দোলন নামে পরিচিত। ১৯৪৮ সালে জিন্নাহ ঘোষণা দেন, কেবল উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা। 

এ ঘোষণার পর বাংলার দামান ছেলেরা কঠোর আন্দোলন করেন। পাকিস্তানের অধিকাংশ লোকের মাতৃভাষা ছিল বাংলা। মা আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে। ১৯৫২ সালে ২১ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা বাতিল করে বাংলার দামাল ছেলেরা মিছিল বের করেন। পুলিশ মিছিলে গুলি করেন। 

এতে সালাম, রফিক, বরকত, জব্বার ও আরও অনেকে শহীদ হন। অবশেষে ভাষা আন্দোলন গণআন্দোলনের রূপ ধারণ করে। ১৯৫৬ সালে বাংলা মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পান। বাঙালিদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে মাতৃভাষা হিসেবে বাংলা পান। 

ইউনেস্কো ১৯৯৯ সালে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। তাই বলা যায় মাতৃভাষা রক্ষার জন্য বাঙালিরা যে আন্দোলন করেছিলেন তাই ভাষা আন্দোলন।


ভাষা আন্দোলনে বাঙালিরা বুকের তাজা রক্ত দিয়েছিল। পৃথিবীর আর কোন জাতি ভাষার জন্য এত রক্ত দেননি। তাই ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে ইউনেস্কো ঘোষণা দেন। 

বাংলাভাষা মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পর বাঙালিরা মাতৃভাষায়ে কথা বলার অধিকার পান। ভাষা আন্দোলন ছিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার আন্দোলন।


ভাষা আন্দোলনের তাৎপর্যসমূহ

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন ছিল বাঙালি অধিকার আদায়ের প্রথম আন্দোলন। এই আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালি জাতি মাতৃভাষা হিসেবে বাংলা লাভ করেন। পাকিস্তানি শাসকদের অন্যায় দাবির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন। 

বাঙালিরা বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে মাতৃভাষা হিসেবে বাংলার স্বীকৃতি লাভ করেন। বাঙালিরা এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বতন্ত্র জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবার বাসনা প্রকাশ করেন।

ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব : 

বাঙালির মাতৃভাষা বাংলা। বাংলাভাষা মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃতি লাভের জন্য ১৯৫২ সালে আন্দোলন করেন, যা ভাষা আন্দোলন নামে পরিচিত। নিম্নে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব উল্লেখ করা হলো : 

১. বাঙালি জাতীয়তাবাদ সৃষ্টি : 

ভাষা আন্দোলনের অন্যতম গুরুত্ব হলো বাঙালি জাতীয়তাবাদ সৃষ্টি। বাঙালিরা স্বতন্ত্র জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেন। তাদের মধ্যে জাতীয় চেতনার উদ্ভব ঘটে।

২. বাঙালি মনে প্রথম বিদ্রোহ প্রকাশ : 

ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে সর্বপ্রথম বাঙালিরা পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী মনোভাব প্রকাশ করেন। বাঙালিরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পান। যার ফলে বাঙালি জাতি সাহসী জাতিতে পরিণত হয়। বাঙালি জাতি বীরের জাতি হিসেবে বিশ্বে আত্মপ্রকাশ করে

৩. ভবিষ্যৎ আন্দোলনের প্রেরণা : 

ভাষা আন্দোলনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ভবিষ্যতে আন্দোলনের প্রেরণা সৃষ্টি। ভাষা আন্দোলনের ফলে বাঙালিরা ভবিষ্যতে সবরকম অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার প্রেরণা পায় ভাষা আন্দোলন হলো ভবিষ্যৎ আন্দোলনের প্রেরণা।

৪. বাঙালিদের সংঘবদ্ধ : 

ভাষা আন্দোলন সর্ব প্রথম বাঙালিদের সংঘবদ্ধ আন্দোলনের প্রেরণা যোগায়। বাঙালিরা সংঘবদ্ধভাবে অন্যায় ও শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা অনুপ্রেরণা পান ভাষা আন্দোলন হতে। ভাষা আন্দোলন বাঙালি জাতিকে সচেতন হতে ঐক্যবদ্ধ করে।

৫. রক্তদানের তাৎপর্য উপলব্ধি : 

বাঙালি জাতি বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে মাতৃভাষা বাংলা লাভ করেন। বাঙালিরা সর্বপ্রথম রক্তদানের তাৎপর্য উপলব্ধি করেন। রক্ত দানের বিনিময়ে বাঙালিরা বিশ্বে বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। বাঙালিরা দাবি আদায়ের পরম আনন্দ উপভোগ করতে পারেন।

৬. অধিকার সম্পর্কে সচেতন : 

ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালিরা সর্বপ্রথম নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে পারে। বাঙালি জাতি নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য সশস্ত্র সংগ্রামে লিপ্ত হয়। অধিকার আদায়ে বাঙালি মন ইস্পাতে পরিণত হয়।

নিত্য নতুন সকল আপডেটের জন্য জয়েন করুন

Telegram Group Join Now
Our Facebook Page Join Now
Class 8 Facebook Study Group Join Now
Class 7 Facebook Study Group Join Now
Class 6 Facebook Study Group Join Now

Post a Comment