
আমার স্বাস্থ্য আমার সুরক্ষা - অষ্টম শ্রেণির স্বাস্থ্য সুরক্ষা ১ম অধ্যায় সমাধান - Class Eight Health Protection chapter 1 Solution
আমার স্বাস্থ্য আমার সুরক্ষা অষ্টম শ্রেণি
'স্বাস্থ্যই সম্পদ' এ কথাটি আমরা সবাই শুনেছি তাই না? স্বাস্থ্য ভালো না থাকলে কি আমরা ভালো থাকি? কেমন যেন সবকিছু অন্যরকম হয়ে যায়। শরীর কিংবা মন ভালো না থাকলে কোনো কিছুই ভালো লাগে না। কারও সাথে কথা বলতেও ভালো লাগে না, শোনারও ধৈয্য থাকে না। এসব পরিস্থিতিতে কীভাবে ভালো থাকা যায় স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ের মাধ্যমে আমরা তাই তো শিখছি। প্রতিটি শ্রেণিতে এ বিষয়ে নতুন নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করে আরও যোগ্য হয়ে উঠছি।
ভালো রাখে বলে মনে করি ইত্যাদি জেনে নেবো। এরপর 'সুস্বাস্থ্য চর্চায় আমার পছন্দের ব্যক্তির কাজ' ছকটির প্রথম কলামে তা লিখব এবং সে অভ্যাস বা আচরণগুলো তার সুস্বাস্থ্য গঠনে কীভাবে প্রভাব ফেলে সে বিষয়ে সহপাঠীদের সাথে মতবিনিময় করব।
আমার স্বাস্থ্য আমার সুরক্ষা - অষ্টম শ্রেণির স্বাস্থ্য সুরক্ষা ১ম অধ্যায় সমাধান
সুস্বাস্থ্য চর্চায় আমার পছন্দের ব্যক্তির কাজ - পৃষ্ঠা ৩ সমাধান
| পছন্দের ব্যক্তির কাজ | এই কাজের প্রভাব |
| আমার পছন্দের ব্যক্তি আমার বাবা । তিনি প্রতিদিন খুব সকালে ঘুম থেকে উঠেন । | সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠলে কাজ করার অনেক সময় পাওয়া যায় এবং শরীর ও মন ভালো থাকে । |
| তিনি নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করেন। | শরীর চর্চার ফলে তিনি বয়স্ক হলেও যুবকদের মতোই ফিট রয়েছেন । |
| সে ভিটামিনযুক্ত সবুজ শাকসবজি প্রতিদিন খায়। | পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার ফলে তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে গেছে এবং তিনি সবসময় সুস্থ থাকেন । |
| তিনি কোনো ধরনের মানসিক চাপ নেন না । | মানসিক চাপ না থাকার কারণে তার বাসার কাজ এবং অফিসের কাজ তিনি মনোযোগ সহকারে করতে পারেন । |
| তিনি অতিরিক্ত তেল চর্বিযুক্ত খাবার খান না এবং আমাদেরকেও খেতে নিষেধ করেন। | অতিরিক্ত তেল চর্বি খাবার না খাওয়ার কারণে তিনি এবং আমরা শারীরিকভাবে স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছি । |
| অসুস্থ হলে হাঁচি ও কাশি দেওয়ার সময় তিনি টিস্যু অথবা রুমাল দিয়ে মুখ ঢাকেন। | এই কাজের ফলে অন্য ব্যক্তির রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। |
| তিনি সবসময় নিজেকে ও নিজের জামা কাপড় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখেন । | এই কাজের ফলে তিনি ব্যাকটেরিয়া জনিত ব্যাধি থেকে সব সময় দূরে থাকেন । |
| বাবা সব সময় প্রাথমিক চিকিৎসার বাক্স ঘরে রাখেন। | এর ফলে আমাদের পরিবারে কেউ হঠাৎ অসুস্থ হলে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করতে পারি। |
| তিনি রাতে দেরি করে ঘুমান না, খুব তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যান। | রাত জাগা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর । এ কাজের ফলে তিনি শারীরিক সুস্থ রয়েছেন। |
আমার স্বাস্থ্য আমার সুরক্ষা - অষ্টম শ্রেণির স্বাস্থ্য সুরক্ষা ১ম অধ্যায় সমাধান
আমার দৈনন্দিন সময় - পৃষ্ঠা ৪ ও ৫ নং সমাধান
একই ক্যাটাগরির অন্যান্য পোস্ট
| ভালো/খারাপ ছিলাম | কি কি কারনে ভালো/খারাপ ছিলাম | ||
| ১ম দিন | সকাল | ভালো ছিলাম | সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর আমি খুব আনন্দিত ছিলাম। কারণ আমার জন্মদিন ছিল। পরিবারের সবাই আমাকে নিয়ে ব্যস্ত ছিল। তাই দিনটা আমি খুব আনন্দে ছিলাম। |
| দুপুর | ভালো ছিলাম | দুপুরে জন্মদিনের জন্য অনেক সুস্বাদু রান্নাবান্না হয়েছিল। আব্বু আমার জন্মদিনের জন্য ঘর সাজিয়েছিলেন। বড় ভাইয়া দোকান থেকে কেক আনতে গিয়েছিলেন। | |
| বিকাল | ভালো ছিলাম | বিকেলে আমি অনেক হ্যাপি ছিলাম। কারণ বিকেলে আমার জন্মদিন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। জন্মদিনে অনেক মেহমান এসেছিল। আমার অনেক বন্ধু-বান্ধব এসেছিল এবং আমরা সবাই মিলে অনেক মজা করছিলাম। | |
| রাত | খারাপ ছিলাম | বিকেলে জন্মদিনে সবাই আসলেও আমারে প্রিয় বন্ধু আসতে পারেনি এবং তাকে ফোন দিয়ে পাইনি। এজন্য তার কথা চিন্তা করে মনটা রাতে অনেক খারাপ ছিল। |
| ভালো/খারাপ ছিলাম | কি কি কারনে ভালো/খারাপ ছিলাম | ||
| ২য় দিন | সকাল | ভালো ছিলাম | সকালে মনটা অনেক ভাল ছিল। কারণ আমার প্রিয় বন্ধুটি ফোন করে জানিয়েছিল যে, সে কেন আমার জন্মদিনে আসতে পারেনি এবং আমাকে জন্মদিন এর অভিনন্দন জানিয়েছে । সে বলেছে পরবর্তী জন্মদিনে সে অবশ্যই আসবে। |
| দুপুর | ভালো ছিলাম | স্কুল ছুটি থাকার কারণে আমি বাসায় আম্মুকে রান্নাবান্নার কাজে সহযোগিতা করেছি এবং ঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করেছি। নিজের পড়ার টেবিল নিজেই গুছিয়েছি। নিজের কাজ নিজে করে খুব ভালই লাগছিল। | |
| বিকাল | ভালো ছিলাম | আব্বু আমাদের সবাইকে নিয়ে বিকেলে পার্কে ঘুরতে গিয়েছিলেন। আমরা সবাই বিকেলের অবসর সময়টাকে আনন্দে কাটিয়েছি। ছোট বোনের জন্য বিভিন্ন ধরনের খেলনা কিনেছি। | |
| রাত | ভালো ছিলাম | সন্ধ্যার পরে পড়তে বসেছিলাম। পড়া শেষে সবাই একসাথে খেতে বসে দিনের আনন্দের কথাগুলো একে অপরের সাথে শেয়ার করেছিলাম। সর্বোপরি রাতে আমি অনেক ভালো ছিলাম। |
আমাদের দৈনন্দিন ভালো থাকার পরিস্থিতিগুলো সহপাঠীদের সাথে আলোচনা ও পর্যালোচনা করেছি। একই সাথে যে ধরনের পরিস্থিতিতে ভালো থাকতে পারি না এবং এর সাথে সম্পর্কিত পরিস্থিতিগুলো নিয়েও নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছি। তাহলে নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা কী দেখতে পেলাম? শরীর, মন ও পারস্পরিক সম্পর্ক এর মধ্যে যে কোনো একটা খারাপ থাকলে আমাদের ভালো থাকা ব্যাহত হয়।
আমার পছন্দের একজন ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করেছি এবং তার দৈনন্দিন অভ্যাস পর্যবেক্ষণ করে তথ্য লিপিবদ্ধ করেছি। এরপর দলগত আলোচনা করে সুস্বাস্থ্য চর্চায় তাদের এই কাজের প্রভাব ও কী কারণে এই ধরনের প্রভাব তৈরি হয় বলে মনে করছি তা নিয়ে আলোচনা ও উপস্থাপন করেছি।
নিজেদের এবং আমাদের পছন্দের ব্যক্তির কাজের পর্যালোচনা করে আমাদের যে উপলব্ধিগুলো হলো তা 'ভালো থাকার জন্য সহায়ক কাজ ও অভ্যাস' ছকে লিখি।
আমার স্বাস্থ্য আমার সুরক্ষা - অষ্টম শ্রেণির স্বাস্থ্য সুরক্ষা ১ম অধ্যায় সমাধান
ভালো থাকার জন্য সহায়ক কাজ ও অভ্যাস - ৬ নং পৃষ্ঠার সমাধান
যোগাযোগ ও সম্পর্ক উন্নত করুন:
- পরিবারের সদস্যদের সাথে সকারাত্মক যোগাযোগ করুন।
- বন্ধুবান্ধবীদের সঙ্গে সময় কাটান।
প্রতিদিনের চাকরি ও দায়িত্বসহ আত্ম-উন্নতি:
- কাজের জন্য নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শখের সময় নির্ধারণ করুন।
- দায়িত্বসহ কাজে সঠিক প্রয়াস করুন।
শারীরিক স্বাস্থ্যের যত্ন:
- নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
- স্বাস্থ্যকর খাবার নিন এবং পর্যাপ্ত ঘুম নাওন।
শখের জন্য সময় নির্ধারণ করুন:
- পড়াশোনা, চিত্রকলা, সঙ্গীত ইত্যাদি শখের জন্য সময় বারান্দা করুন।
- নিজের শখের প্রতি সময় নির্দিষ্ট করুন।
ধ্যান এবং মেডিটেশন:
- ধ্যান ও মেডিটেশন এর মাধ্যমে মানসিক শান্তি অনুভব করুন।
- প্রতিদিন কিছু মিনিট ধ্যান করুন।
গৃহস্থালি শখের ক্ষেত্রে চেষ্টা করুন:
- ঘরের ব্যবস্থাপনা, বাসার সাজসজ্জা করুন।
- কিছু নতুন কৌশল শেখে নিন।
অভ্যন্তরীণ উন্নতি:
- নিজের মনকে বৃদ্ধি দিন।
- নতুন কিছু শেখে আত্মসমৃদ্ধি অনুভব করুন।
এবার আমরা 'ভালো থাকার জন্য সহায়ক কাজ ও অভ্যাস' ছকে যে কাজগুলো লিখেছি তা শিক্ষকের নির্দেশনা অনুযায়ী 'ভালো থাকা' চিত্রটিতে যুক্ত করি।
শারীরিকভাবে ভালো না থাকলে তা মনের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, আবার এই প্রভাব থেকে নিজের প্রতি বা অন্যদের প্রতি ভালোবাসা, সহমর্মিতা কিংবা দায়িত্ব পালনে অনীহা কাজ করে। শরীর বা মন ভালো না থাকলে খেতে ইচ্ছে হয় না, খেলাধুলা কিংবা অন্যদের সাথে আনন্দ ও গল্প করার আগ্রহ কাজ করে না। আবার মা বাবা, অন্যান্য আপনজন কিংবা বন্ধু বা সহপাঠীর সাথে ভুল বোঝাবুঝি বা মনোমালিন্য হয় ফলে অনেক সময় যেমন মন খারাপ হয়, তেমনই শরীরে ও মনে শক্তি কমে আসে।
আমার দৈনন্দিন কাজের সময়
এবার প্রথমে 'আমার দৈনন্দিন সময়' ছকে যে কাজগুলো লিপিবদ্ধ করেছিলাম সেগুলোকে ছবিতে সংযুক্ত করি। এরপর ভালো থাকার জন্য আরও যে দৈনন্দিন চর্চাগুলো করতে চাই নিচের ছবিটির সাথে মিলিয়ে লিখে নিই।
যখন আমরা শরীর, মন ও পারস্পরিক সম্পর্কগুলো নিয়ে ভালো থাকি, তখনই আমরা সম্পূর্ণভাবে ভালো থাকি। এই ভালো থাকাকে ইংরেজিতে wellbeing বলে। আমরা মনে রাখব বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মতে স্বাস্থ্য হল 'শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক সুস্থতার একটি সম্পূর্ণ অবস্থা; শুধুমাত্র রোগ বা দুর্বলতার অনুপস্থিতি নয়'।
অনেকেই মনে করেন অসুস্থ না হলেই আমরা সুস্বাস্থ্যের অধিকারী; এ ধারণা একেবারেই ঠিক নয়। আমরা যখন শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক স্বাস্থ্যকে একসাথে ভালো রাখতে পারব তখনই কেবল সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হব।



تعليق واحد