পবিএ ঈদে মিলাদুন্নবী
পবিএ ঈদে মিলাদুন্নবী সম্পর্কে আজকে কিছু গুরুত্বপূরর্ণ প্রশ্ন শেয়ার করব। এই প্রশ্ন গুলো থেকে আমরা যা যা জানতে পারব তা হলো- ঈদে মিলাদুন্নবী কি ও কেন, ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি জায়েজ? ঈদে মিলাদুন্নবী আমল, ও ঈদে মিলাদন্নবী (সঃ) সম্পর্কে বিভিন্ন দলীল।
প্রশ্ন:- (১) হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লামের আগমন বা মিলাদুন্নবীর উদ্দেশ্যে খুশি উদযাপন করার কোন দলীল কি কোরানে রয়েছে ?
উত্তর:- নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হলেন আল্লার তরফ হতে উম্মতের জন্য শ্রেষ্ঠ নেয়ামত, আর এই নেয়ামত প্রাপ্তির উদ্দেশ্যে খুশি মানানোর হুকুম কোরানের মধ্যে বিদ্যমান।
১. সুরা ইউনুস ১১ পারা ৫৮ নং আয়াতে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেনঃ
“হে হাবিব ( সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম আপনি বলে দিন, মুসলমানগণ যেন আল্লার নেয়ামত ও রহমত পাওয়ার কারনে যেন খুশি মানায়, যা তাদের যাবতীয় বস্তু হতে উত্তম”
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) এ আয়াতের তাফসীরে বলেন
এখানে আল্লাহর অনুগ্রহ (ফাদ্বালুল্লাহ) দ্বারা ইলমে দ্বীন বুঝানো হয়েছে আর (রহমত), দ্বারা সরকারে দো আলম নূরে মোজাসসাম আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বুঝানো হয়েছে।
(সূত্রঃ সূরা আম্বিয়া আয়াত নং ১০৭,তাফসিরে রুহুল বায়ান, তফসিরে কবির ও ইমাম সিয়ূতী কৃত তফসির আদদূরূল মনসুর ৪র্থ খন্ড- ৩৬ পৃষ্ঠায় অনুরূপ বর্ণনা করেছেন)।
২. সুরা দোহায় আল্লাহ ইরশাদ করেন,
“অতএব আল্লাহর তরফ হতে প্রাপ্ত নেয়ামতের খুব চর্চা কর”
আর এর বিরোধিতা বা অমান্য করা মানে প্রকৃত পক্ষে আল্লাহর হুকুমের অমান্য করা।
প্রশ্ন:- (২) হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লামের জন্ম তারিখ সম্বন্ধে ওলামায়ে কেরামগণের মন্তব্য কী রূপ ?
উত্তর:- রসুলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লামের জন্ম মোবারক ১২ই রবিউল আওয়াল তারিখে হয়েছিল। হযরত জাবের এবং হযরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা হতে বর্ণিত,
হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম এর জন্ম ১২ই রবিউল আওয়াল তারিখ সোমবার দিন হয়েছিল।
(সিরাতুন নবুবিয়াহ ইবনে কাসির ১ম খন্ড ১৯৯ পৃঃ, আল বেদায়াওয়ান নেহায়া ২য় খন্ড ২৬০ খৃঃ)
ইমাম ইবনে জারীর তাবরাণীর মন্তব্যঃ
ইবনে জারীর তাবরানী লিখেছেন রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লামের জন্ম রবিউল আওয়ায়েলর ১২ তারিখে হস্তির বছর হয়েছিল।
(তারিখে তাবারী ২য় খন্ড ১২৫ পৃঃ)
মোহাম্মদ বিন ইসাহক ও ইমাম ইবনে হেসামেরও মোহাম্মদ ইবনে জওযীর মন্তব্যঃ-
মোহাদ্দীস ইবনে জওযী লিখেছেন যা ইমাম ইসাহক বর্ণনা করেছেন, হুযুর সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লামের জন্ম সোমবার দিন রবিউল আওয়াল মাসে হস্তীর বছর হয়েছিল।
(অল ওফা ১ম খন্ড ৯০পৃঃ, সাবলুল হুদা অয়ার রসাদ ১ম খন্ড ৩৩৪পৃঃ, আসসিরাতুন নবুবিয়াহ ১ম খন্ড ১৮১ পৃঃ)
ইমাম বায়হাক্বীঃ
প্রশিদ্ধ মোহাদ্দেস ইমাম বায়হাক্বী লিখেছেন হুযুর সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম সোমবার দিনে ১২ই রবিউল আওয়ালে জন্মগ্রহন করেছিলেন।
(দালায়েলুল নবুওত ১ম খন্ড ৭৪পৃঃ)
ইবনে কাসীরঃ-
সারহে মোওয়াহিবের মধ্যে ইবনে কাসীর হতে বর্ণিত হয়েছে যে, অধিকাংশ ওলামার নিকট ১২ই রবিউল আওয়াল তারিখ ই প্রশিদ্ধ।
( সূত্রঃ আন নেমাতুল কোবরা ২০২পৃঃ, সিরাতুন নবুবিয়া ৪র্থ খন্ড ৩৩ পৃষ্ঠা, সেরাতুল হালাবীয়া ১ম খন্ড ৫৭পৃঃ)
প্রশ্ন :- (৩) হুযুর সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লামের ওফাত দিবস সম্বন্ধে ওলামায়ে কেরামদের মধ্যে কোন মতাভেদ আছে কী? এবং সঠিক মত কোনটি?
উত্তর:- হ্যাঁ, ওলামায়ে কেরামদের মধ্যে হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লামের ওফাত দিবস সমন্ধে কয়েকটি মত বিদ্যমানঃ
১. ১২ই রবিউল আওয়ালঃ
জমহুর (অধিকাংশ)ওলামাদের নিকট গ্রহণযোগ্য মত হল হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লামের ওফাত দিবস হল ১২ই রবিউল আওয়াল।
২. ১লা রবিউল আওয়ালঃ-
কয়েকজন তাবেয়ী যেমন হযরত সাঈদ বিন মুসাইব, ইমাম সুলায়মান ও আন্তারা (রাদিয়াল্লাহু আনহুম আজমাঈন)
(তফসীর জামেউল বায়ান, তাবীর ৬ খন্ড ৫১ পৃঃ, তারিখুল উমাম ওয়াল মুলক ৩য় খন্ড ১৯৭ পৃঃ)
৩. ২রা রবিউল আওয়ালঃ-
বিখ্যাত ইমাম ইবনে হাজার আস্কালানি বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে প্রমাণ করেছেন যে, হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লামের ওফাতের দিন ছিল ২রা রবিউল আওয়াল।
(ফতহুল বারী শারহে বোখারী ৮ম খন্ড ১৩০ পৃঃ)
৪. ১৩ই রবিউল আওয়াল:-
বিশিষ্ঠ মোহাক্কীক, চিন্তাবিদদের ও ওলামাদের মতে এই তারিখই হল হুযুরের ওফাত মোবাকরেক সঠিক তারিখ, যা ইমাম বারুযী, ইমাম ইমাদুদ্দিন বিন কাসির এবং ইমাম বদরুদ্দিন বিন জামায়া প্রমুখ গবেষণা করে বলেছেন।
পরিশেষে বলা যায়, সঠিক ব্যাখার দ্বারা বিশিষ্ট ওলামায়ে কেরাম সাব্যস্ত করেছেন যে, চাঁদের হিসাবে ওই দিন মক্কা শরীফে ১৩ই রবিউল ঐ আওয়াল ছিল এবং মদিনা শরীফে চাঁদ না দেখা যাওয়াই ১২ই রবিউল আওয়াল ছিল।
(ফতওয়া রেবীয়া, রেসালা নুতকুল হেলাল... ২য় অধ্যায় ৯২পৃঃ)
প্রশ্ন:- ( 8 ) ১২ই রবিউল আওয়ালে হুযুর সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লামের ওফাত ও হয়েছিল, কিন্তু সে কারনে ওই দিন দুঃখ কেন মানানো হয় না?
উত্তর:- উম্মতদের জন্য হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়াসাল্লামের আগমন ও প্রস্থান দুই-ই এক, হযরত আব্দুল্লা বিন মাসউদ বর্ণনা করেছেন হুযুর সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,
“আমার প্রকাশ্য জিন্দেগী এবং আমার বেসাল দুই-ই তোমাদের জন্য উত্তম”।
(শেফা শরীফ ২য় খন্ড ১৯ পৃঃ)
অপর স্থানে এর হিকমত প্রসঙ্গে বর্ণিত হয়েছে,
যখন আল্লাহ তায়ালা যখন উম্মতের উপর নিজের খাস রহম করতে চান তখন সেই উম্মতের মধ্য থেকে নবীকে পৃথক করিয়ে নেন, এবং তিনি ওই উম্মতের জন্য শাফায়াতের মাধ্যম হয়ে যান।
(মুসলিম শরীফ)।
তাছাড়া নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে সোমবারের রোযা রাখার কারন হিসেবে তাঁর বেলাদত ও প্রথম অহী নাযিলের কথা উল্লেখ করেছেন।
কিন্তু দুনিয়া থেকে বিদায় গ্রহন বা ইন্তিকাল উপলক্ষে শোক পালন করার কথা উল্লেখ করেননি।
যদি করতেন, তাহলে আমরা তা পালন করতাম। সুতরাং একই দিনে ও একই তারিখে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা এর জন্ম এবং ইন্তিকাল হলেও ওফাত দিবস পালন করা যাবে না। এটাই কোরআন- হাদীসের শিক্ষা।
প্রশ্ন:- (৫) হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম ১২ ই রবিয়ল আওয়ালে জন্মদিন উপলক্ষে খুশি মানিয়েছিলেন কী ?
তাঁর মুযেজা, বৈশিষ্ট্য, জীবনী প্রভৃতি সম্পর্কে বায়ান করা।
সরকার সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম নিজেই নিজের মিলাদ শরীফ মানিয়েছেন,
হাদিসঃ-
হযরত আবু কাতাদাহ বর্ণনা করেন যে, হুযুর কে জিজ্ঞাসা করা হল ইয়া রাসুলাল্লাহ আপনি সোমবারের দিন কেন রোযা রাখেন, হুযুর ইরশাদ করলেন ওই দিন আমার জন্ম হয়, এবং ওই দিন-ই আমার উপর ওহী নাযীল হয়।
(মুসলিম ২য় খন্ড ৮১৯পৃঃ, হাদিস নং ১১৬২, ইমাম বায়হাকী আস সুনানুল কুবরা ৪থ খন্ড ২৮৬ পৃঃ, হাদিস নং ৮১৮২)
এ ছাড়াও হাদিস হতে প্রমাণিত স্বয়ং হুযুর নিজের জন্মের খুশির উদ্দেশ্যে ছাগল যবাহ করেছিলেন।
(ইমাম সুয়ুতী আল হাবিলুল ফাতোয়া ১ম খন্ড ১৯৬ পৃঃ, হুসনুল মাকাসিদ ফি আমালিল মৌলিদ ৬৫ পৃঃ, ইমাম নাব হানী হুজ্জাতুল্লাহে আলাল আলামীন ২৩৭পৃঃ)
তাহলে বোঝা গেল মিলাদ শরীফ পালন করা হুযুরের সুন্নাত।
প্রশ্ন:- (৬) খোলাফায়ে রাশেদীনের বা সাহাবীদের আমলে পবিত্র ‘ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রচলন কী ছিল?
উত্তরঃ- আল্লামা সাহাবুদ্দীন ইবনে হাজর হায়তামী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেন,
খোলাফায়ে রাশেদীনের যুগে ঈদে মিলাদুন্নবী' সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করার নীতি প্রচলন ছিল।
যেমনঃ হযরত আবুবকর সিদ্দিক (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেছেন-
“যে ব্যক্তি ‘ মিলাদুন্নবী' সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাঠ করার জন্য এক দিরহাম অর্থ খরচ করবে, সে ব্যক্তি বেহেস্তে আমার সাথী হবে”।
হযরত ওমর ফারুক (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেছেন-
“যে ব্যক্তি ‘মিলাদুন্নবী’ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তাজীম ও সম্মান করলো, সে যেন ইসলামকে জীবিত রাখলো”।
হযরত ওসমান ( রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেছেন-
“যে ব্যক্তি মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাঠ করার জন্য এক দিরহাম অর্থ খরচ করলো, সে যেন বদর ও হোনাইনের যুদ্ধে শরীক হলো”।
হযরত আলী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেছেন-
“যে ব্যক্তি' মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়াসাল্লামকে সম্মান করবে এবং মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাঠ করার উদ্যোক্তা হবে, সে দুনিয়া থেকে (তওবার মাধ্যমে) ঈমানের সাথে বিদায় নিবে এবং বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে”।
(সূত্রঃ আননে' মাতুল কোবরা আলাল ফি মাওলিদি সাইয়্যেদ ওলদে আদম ৭-৮ পৃষ্টা)।
সাহাবায়ে কেরামগণ হুযুর পাকের সামনে মিলাদ মানিয়ে ছিলেন এবং হুযুর তা বারণ করেননি বরং খুশি হয়েছিলেন।
প্রশ্ন:- (৭) মক্কায় পুরাতন সমাজ ব্যবস্থায় মিলাদ কি প্রচলন ছিল?
উত্তর :- হ্যাঁ, প্রচলন ছিল, মুহাদ্দিস ইবনে জওযী বর্ণনা করেছেন হারামাইন শরিফাইন-মক্কা মাদিনার বাসিন্দারা, মিসর, ইয়ামান, শাম এমন কি সমস্ত আরবের পূর্ব্ব হতে পশ্চিম পর্যন্ত মুসলমানদের মধ্যে এরূপ প্রথার প্রচলন ছিল যে,
মিলাদ শরীফ পাঠ করত ও শুনত এবং এ সকল দ্বারা অধিক সাওয়াবের অধিকারি হত।
১৯৭১ সালের জানুয়ারী মাসে 'মাহনামা তরিক্বত লাহোর পত্রিকায় মক্কা শরীফের জাশনে ঈদে মিলাদুল্লবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা পালনের বর্ণনা এভাবে লিখিত হয়েছে যে,
“হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর শুভাগমন দিবসে মক্কা শরীফের মধ্যে বড় ধরনের আনন্দ উৎসব পালন করা হয়। ”
ঐ দিবসকে ‘ঈদে ইয়াওমে বেলাদতে রাসূল’ বলা হয়। ঐ দিন চারিদিকে পতাকা উড়তে থাকত। হেরেম শরীফের গভর্ণর এবং হেযাযের কমান্ডার সহ আরো অন্যান্য কর্মকর্তাগণ আভিজাত্য পোশাক পরিধান করে মাহফিলে উপস্থিত হতেন।
হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর 'পবিত্র জন্মস্থানে’- গিয়ে কিছুক্ষণ নাত-গজল পরিবেশন করা হত, হেরেম শরীফ থেকে ‘মৌলুদুন্নবী' (পবিত্র জন্মস্থান) পর্যন্ত দুই সারিতে আলোকসজ্জা করা হত।
মৌলুদ শরীফের স্থান নূরের আলোর ভূমিতে পরিণত হত এবং মৌলুদ শরীফের স্থানে সু-কন্ঠে প্রিয় মিলাদ পালন করতেন। এ অবস্থায় রাত দুইটা পর্যন্ত মিলাদখানী, নাত এবং বিভিন্ন খতম পড়তেন।
দলে দলে লোকজন এসে নাত পরিবেশন করতেন। ১১ই রবিউল আউয়াল শরীফের মাগরীব হতে ১২ই রবিউল আউয়াল শরীফের আসর পর্যন্ত ২১ টি তোপধ্বনি করা হত,
মক্কা শরীফের ঘরে ঘরে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে খুশি আনন্দ এমনকি স্থানে স্থানে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হত।”
প্রশ্ন:- (৮) মিলাদ শরীফ সম্পর্কে হাদিসে কি ভাবে এসেছে?
উত্তর:-
মিলাদ সম্পর্কিত কয়েকটি হাদিস শরীফঃ
প্রশিদ্ধ হাদিসে বর্ণিত হযরত উম্মুল মুমিনিন আয়েসা সিদ্দিকা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেছেন যে,
“রসুল পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম এবং আবুবকর সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু আনহু আমার নিকট নিজ নিজ মিলাদ শরীফের বর্ণনা করেছেন।”
(ইমাম বায়হাকী এই বর্ণনা কে হাসান বলেছেন) (আল যামুল কাবীর লিত তাবরাণী ১ম খন্ড ৫৮ পৃঃ, ময়মাউল যাওয়াঈদ ৯ম খন্ড ৬৩ পৃঃ)
হুযুর পাক নিজের মিলাদ বর্ণনা করে বলেন;
অবশ্যই আমি আল্লাহর নিকট খাতিমুল নব্বীইন নির্ব্বাচিত হয়েছি ওই সময়, যে সময় হযরত আদাম মাটি ও পানীতে মিশ্রিত অবস্থায় ছিল।
আমি তোমাদের কে আমার প্রাথমিক অবস্থার খবর দিচ্ছি আমি হযরত আদম আলায়হিস সালামের দুয়া ও হযরত ঈসা আলায়হে সাল্লামের খুশির বার্তা এবং আমার মাতার স্বপ্ন যা তিনি আমার জন্মের সময়
দেখেছিলেন যে উনার মধ্য হতে একটি নুর নির্গত হয়েছে এবং যার ছটায় শাম দেশের বহু মহল রওশন হয়ে গেছে।
মুস্লাদ আফ্যার হাদিস নং ২৩৬৫, তাফসির দুররে মাঙ্গুর ১ম খন্ড ৩৩৪ পৃঃ, মাওয়ারেদুল জান্নান ১খন্ড ৫১২ পৃঃ,
সহী ইবনে হাব্বান ৯ম খন্ড ১০৬ পৃঃ, আল মুস্তাদ্রাক লিল হাকিম ৩য় খন্ড ২৭ পৃঃ, আল বেদায়া অয়ান নেহায়া ২য় খন্ড ৩২১ পৃঃ,মাযমাউল যাওযায়েদ ৮ম খন্ড ৪০৯ পৃ প্রভৃতি)
হযরত মুতালিব বর্ণনা করেছেন যে,
হযরত আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হুজুরের বারগাহে কিছু প্রশ্ন নিয়ে হাযির হলেন, প্রশ্ন করার পুর্বেই মেম্বারের মধ্যে আরোহন করে বলেন যে আমি কে? প্রত্যুত্তরে সকলে উত্তর দিলেন আপনার উপর সালাম বর্ষন হোক; আপনি হচ্ছেন আল্লার রসুল।
হুযুর আকরাম সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করলেন যে, আমি আব্দুল্লার পুত্র মোহাম্মাদ । আল্লাহ তায়ালা সমস্ত মানুষ কে সৃষ্টি করেছেন এবং ওই মানুষদের মধ্য থেকে উৎকৃষ্ট করে আমাকে সৃষ্টি করেছেন আবার ওই গোষ্ঠীকে দুটি ভাগে ভাগ করেছেন ‘আরব ও আযাম’
এবং তাদের মধ্যে অতি উত্তম করে আমাকে সৃষ্টি করেছেন পুনরায় ওই ভাগ হতে কাবিলা তৈরী করেছেন এবং তাদের মধ্যে উত্তম কাবিলায় আমাকে সৃষ্টি করেছেন অতএব আমাকে বংশ এবং নসবের মধ্যে সবচেয়ে উত্তম করে সৃষ্টি করেছেন।
(জামে তীরমিযী ২য় খন্ড ২০১ পৃঃ, মুস্নাদে ইমাম আহমদ ১ম খন্ড ৯ পৃঃ, দালায়েলুল নবুওত বায়হাকী ১ম খন্ড ১৬৯পৃঃ, কানযুল উম্মাল ২য় খন্ড ১৭৫ পৃঃ)।
প্রশ্ন- (৯) ঈদে মিলাদুন্নবীর ফযীলত প্রসঙ্গে ওলমাদের মন্তব্য কিরূপ ?
উত্তর:- প্রশিদ্ধ আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের দৃষ্টিতে পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- এর গুরুত্ব ও ফযীলত বর্ণিত হলঃ
১. হযরত ইমাম হাসান বাসরী রহমাতুল্লাহ আলায় বলেন,
“আমার একান্ত ইচ্ছা হয় যে, আমার যদি ওহুদ পাহাড় পরিমান স্বর্ণ থাকত তাহলে তা ঈদে মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষ্যে ব্যয় করতাম।”
(সুবহানাল্লাহ্) (আন্ নেয়ামাতুল কুবরা)
২. হযরত ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন,
“যে ব্যক্তি মীলাদ শরীফ পাঠ বা মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন উপলক্ষ্যে লোকজন একত্রিত করলো, খাদ্য তৈরি করলো ও জায়গা নির্দিষ্ট করলো এবং মীলাদ পাঠের জন্য উত্তম ভাবে (তথা সুন্নাত ভিত্তিক) আমল করলো তাহলে উক্ত ব্যক্তিকে আল্লাহ পাক হাশরের দিন সিদ্দীক শহীদ, সালেহীনগণের সাথে উঠাবেন এবং তাঁর ঠিকানা হবে জান্নাতে নাঈমে”।
(সুবহানাল্লাহ্) (আন্ নেয়ামাতুল কুবরা)
৩. পবিত্র ঈদে মিলাদন্নবী সম্পর্কে হযরত মারুফ কারখী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন,
“যে ব্যক্তি ঈদে মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম উপলক্ষ্যে খাদ্যের আয়োজন করে, অতঃপর লোকজনকে জমায়েত করে, মজলিশে আলোর ব্যবস্থা করে, পরিস্কার- পরিচ্ছন্ন নতুন লেবাস পরিধান করে, মীলাদুন্নবীর তাজিমার্থে সু-ঘ্রাণ ও সুগন্ধি ব্যবহার করে আল্লাহপাক তাকে নবী আলাইহিমুস্ সালামগণের সাথে প্রথম কাতারে হাশর করাবেন এবং সে জান্নাতের সুউচ্চ মাকামে অধিষ্ঠিত হবে।”
( সুবহানাল্লাহ্) (আন্ নেয়ামাতুল কুবরা)
৪. হযরত ইমাম সাররী সাকত্বী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,
“যে ব্যক্তি মীলাদ শরীফ পাঠ বা মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করার জন্য স্থান নির্দিষ্ট করল, সে যেন তার জন্য জান্নাতে রিয়াজ বা বাগান নির্দিষ্ট করলো। কেননা সে তা হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মুহব্বতের জন্যই করেছো। আর আল্লাহ্ পাক-এর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ যে ব্যক্তি আমাকে ভালবাসবে সে আমার সাথেই জান্নাতে থাকবে।”
(তিরমিযি, শিকাত, আন নেয়ামাতুল কুবরা )
৫. পবিত্র ঈদে মিলাদন্নবী সম্পর্কে সাইয়্যিদুল আওলিয়া হযরত জুনাইদ বাগদাদী রহমাতুল্লাহ আলাইহি বলেন,
“যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- এর মিলাদ মহফিলে উপস্থিত হল এবং উপযুক্ত সম্মান প্রদর্শন করলো। সে তার ঈমানের দ্বারা সাফল্য লাভ করবে অর্থাৎ সে বেহেশতি হবে।”
(সুবহানল্লাহ্) (অন্ নি'মাতুল কুবরা)
৬. হযরত ইমাম ফখরুদ্দীন রাযী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন,
“যে ব্যক্তি মিলাদ শরীফ পাঠকরে বা মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহ্ আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করে, লবণ, গম বা অন্য কোন খাদ্য দ্রব্যের উপর ফুঁক দেয়, তাহলে এই খাদ্যে অবশ্যই বরকত প্রকাশ পাবে। এভাবে যে কোন কিছুর উপরই পাঠ করুক না কেন (তাতে বরকত হবেই)”।
(সুবহানাল্লাহ্) অন্ নি'মাতুল কুবরা
৭. হযরত ইমাম রাযী রহমতুল্লাহি আলাইহি আরোও বলেন
“উক্ত মোবারক খাদ্য মীলাদ পাঠকারীর বা মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপনকারীর জন্য আল্লাহ পাকের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে, এমনকি তাকে ক্ষমা না করা পর্যন্ত সে ক্ষান্ত হয় না।”
(সুবহানাল্লাহ্) (আন্ নি'মাতুল কুবরা)
৮. হযরত ইমাম রাযী রহমতুল্লাহ আলাইহি আরো বলেন
“যদি মীলাদ শরীফ পাঠ করে বা মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদ্যাপন করে কোন পানিতে ফুঁক দেয়, অতঃপর উক্ত পানি কেউ পান করে তাহলে তার অন্তরে এক হাজার নূর ও রহমত প্রবেশ করবে। আর তার থেকে হাজারটি বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীণ রোগ দূর হবে। যে দিন সমস্ত কলব (মানুষ) মৃত্যুবরণ করবে সেদিনও ঐ মীলাদুন্নবীর পানি পানকারী ব্যক্তির অন্তর মৃত্যুবরণ করবে না।”
(সুবহানাল্লাহ্) (আন্ নিমাতুল কুবরা)
৯. হযরত ইমাম রাযী রহমতুল্লাহি আলাইহি আরো বলেন
“যে ব্যক্তি মীলাদ শরীফ পাঠ করে বা মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদ্যাপন করে রৌপ্যের অথবা স্বর্ণের দেরহাম সমূহের উপর ফুঁক দেয় অতঃপর তা অন্য জাতীয় মুদ্রার সাথে মিশায় তাহলে তাতে অবশ্যই বরকত হবে। এবং অভাবগ্রস্থ পাঠক কখনই ফকীর হবে না। আর উক্ত পাঠকের হাত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- এর ( মীলাদ পাঠের) বরকতে কখনও খালি হবে না।”
(সুবহানাল্লাহ্) (আন্ নিয়ামাতুল কুবরা)
১০. হযরত জালালুদ্দীন সয়ূতী রহমাতুল্লাহি আলায় বলেন,
“যে স্থানে বা মসজিদে অথবা মহল্লায় মীলাদ শরীফ পাঠ করা হয় বা মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করা হয় সেস্থানে অবশ্যই আল্লাহ পাকের ফেরেস্তাগণ বেষ্টন করে নেন। আর তাঁরা সে স্থানের অধিবাসী গণের উপর সলাত সালাম পাঠ করতে থাকেন । আর আল্লাহ পাক তাদেরকে স্বীয় রহমত ও সন্তুষ্টির আওতাভুক্ত করে নেন। আর নূর দ্বারা সজ্জিত প্রধান চার ফেরেস্তা, অর্থাৎ হযরত জিব্রাইল, মীকাইল, ইসরাফিল ও আর্যরাইল আলাইহিমুস্ সালামগণ মীলাদ শরীফ পাঠকারীর উপর বা মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপনকারীর উপর সালাত-সালাম পাঠ করেন।”
(সুবহানাল্লাহ্) (আনি মাতুল কুবরা)
১১. ইমাম জালালুদ্দীন সূয়ুতী রহমতুল্লাহি আলাইহি আরো বলেন
“যখন কোন মুসলমান নিজ বাড়ীতে মীলাদ শরীফ পাঠ করে তখন সেই বাড়ীর অধিবাসীগণের উপর থেকে আল্লাহ্ পাক অবশ্যই খাদ্যাভাব, মহামারী, অগ্নিকান্ড, ডুবে মরা, বালা মুসিবত, হিংসা- বিদ্বেষ, কু-দৃষ্টি, চুরি ইত্যদি উঠিয়ে নেন। যখন উক্ত ব্যক্তি মারা যান তখন আল্লাহ পাক তাঁর জন্য মুনকীর- নাকীরের সাওয়াল জাওয়াব সহজ করে দেন আর তাঁর অবস্থান হয় আল্লাহ্ পাক- এর সান্নিধ্যে সিদ্দিকের মাকামে। (সুবহানাল্লাহ্) (আন্ নেয়ামাতুল কুবরা) যে ব্যক্তি ঈদে মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- এর তাযীম করতে চাইবে তার জন্য উপরোক্ত বর্ণনা যথেষ্ট।”
প্রশ্ন- (১০) ঈদে মিলাদুন্নবীর দিন কি কি কাজ করা শরীয়ত সম্মত ?
উত্তর-
ঈদে মিলাদুন্নবীর দিন যা যা করণীয় :
১. হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লামের ফযীলত বর্ণনা করা।
২. হুযুর সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লামের জন্ম কালের ঘটনা সমূহ বর্ণনা করা।
৩. জুলুস, কোরান খনি, রোযা, ইসলে সাওয়াব প্রভৃতি করা।
৪. পবিত্র নাত শরীফ, দরুদ শরীফ ও মিলাদ শরীফের মহফিল উদযাপন করা।
প্রশ্ন- (১১) মিলাদ শরীফের সাওয়াব কি হুযুরের নিকট পৌঁছায় এবং এ সম্পর্কে দলীল কি আছে?
উত্তর:- হ্যাঁ, পৌঁছায়। যেরূপ ভাবে কোরান শরীফে সুরা হজের মধ্যে কুরবানীর গোস্ত প্রসঙ্গে বর্ণিত হয়েছে,
“আল্লার নিকট কখনই গোস্ত ও রক্ত পৌঁছায় না, হ্যাঁ তোমাদের পরহেজগারি পৌঁছায়...।”
( সুরা হজ ৩৭ নং আয়াত)
অনুরূপ মিলাদের সাওয়াব হুযুরের পবিত্র দরবারে পৌঁছায়। হাদিস শরীফের মধ্যে বর্ণিত হয়েছে
“ আমার ওফাত শরীফ (ইন্তেকাল) তোমাদের জন্য উত্তম কারন তোমাদের সকল প্রকার আমল আমার নিকট পেশ করা হয় যখন তোমরা কোন উত্তম কাজ কর তখন তার জন্য আমি আল্লার প্রশংসা করি.......।”
(মাজমাউল যাওয়ায়েদ ৯ম খন্ড ২৪পৃঃ, আল মাতালেবুল আলিয়া- কেতাবুল মানাক্কের হাদিস নং ৩৯২৫। মুস্নাদে বাযযার হাদিস নং ১৭০২, জামিউর সাগির ১ম খন্ড ৫৮২ পৃঃ)
অতএব নিঃসন্দেহে মিলাদ শরীফ উদযাপন হল এমনই একটি উত্তম কাজ, যা হুজুরের নিকট পেশ করা হয় এবং তার জন্য তিনি খুশিও হয়ে থাকেন ।
প্রশ্ন- (১২) হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লামের শৈশব অবস্থার কিছু ঘটনাবলী বর্ণনা করুন যা মিলাদ শরীফে বলা প্রয়োজন এবং দলীল ভিত্তিক?
উত্তর:- হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হে সাল্লামের শৈশব অবস্থায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলী হলঃ
১. হযরত আবু ওমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন,
হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম ঈরশাদ করেছেন
“আমার মাতা এ রূপ বর্ণনা করেছেন যে! আমার হতে একটি মহৎ নুর নির্গত হয়, এবং যার ছটায় শাম দেশের প্রসাদগুলিও রৌশন হয়ে যায়”।
(আল ওফা, তাবরানী)
২. হুযুর পাক ঈরশাদ করেছেন,
“আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে আমার একটি বিশেষ মর্যাদা এই যে, আমি খাতনা অবস্থায় ভূমিষ্ট হয়েছি এবং আমার লজ্জাস্থান কেউই দেখেনি।”
(মাদারেজুন নবুওত)
পবিত্র ঈদে মিলাদন্নবী, পবিত্র ঈদে মিলাদন্নবী, পবিত্র ঈদে মিলাদন্নবী, পবিত্র ঈদে মিলাদন্নবী, পবিত্র ঈদে মিলাদন্নবী, পবিত্র ঈদে মিলাদন্নবী, পবিত্র ঈদে মিলাদন্নবী,.
পবিত্র ঈদে মিলাদন্নবী, পবিত্র ঈদে মিলাদন্নবী পবিত্র ঈদে মিলাদন্নবী, পবিত্র ঈদে মিলাদন্নবী, পবিত্র ঈদে মিলাদন্নবী, পবিত্র ঈদে মিলাদন্নবী,
নিত্য নতুন সকল আপডেটের জন্য জয়েন করুন
If any objections to our content, please email us directly: helptrick24bd@gmail.com