ওজন বৃদ্ধি আমাদের এখন নিত্য ঘটনা। তাই আজ আমি আপনাদের শেয়ার করব ওজন কমানোর বিভিন্ন উপায়। অতিরিক্ত ওজন বেড়ে গেলে অনেকের মধ্যে অস্বস্তিবোধ দেখা যায়। ojon komanor upay সম্পর্কে ইসলাম কি বলে তা আজ আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব।
ওজন কমানোর উপায় | ইসলাম কি বলে জেনে নিন
কেউ যদি শরীরের ওজন কমানোর নিয়্যত করে, তার জন্য প্রধান বাধা হচ্ছে, মনের মধ্যে সব সময় ‘খাও খাও' ভাব বিরাজ করতে থাকা। যা তাকে দুর্বল হয়ে যাওয়ার ভীতি প্রদর্শন করতে থাকে।
আর যারা আহারের বেলায় রসনা বিলাসী, এমন ব্যক্তিও মনের ভয়ে খুব খায়, শরীর বাড়ায়। আর পরিণামে বিভিন্ন ধরনের রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে যায়।
তাই আপনাদের প্রতি নিবেদন, আপনার শরীরের ওজন যদি বেশি হয়ে থাকে, তাহলে ইবাদত-বান্দেগী করতে সক্ষম হওয়ার নিয়্যতে ওজন কমানোর রুচিশীল মনোভাব তৈরি করে নিন।
আর এ কাজে সহায়তা লাভের উদ্দেশ্যে প্রথমে কিছু হাদীস শরীফ লক্ষ্য করুন। যেন আপনার সংকল্পে আরো দৃঢ়তা সৃষ্টি হয়।
যখন মনমানসিকতা তৈরী হবে, তখন দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতা অর্জনের উদ্দেশ্যে আপনার শরীরের ওজন স্বাভাবিক (NORMAL) হবে, ওজনকে স্বভাবিক করতেই হবে,
তাহলে আল্লাহ তাআলার নিকট কল্যাণ ও মঙ্গল কামনাপূর্বক উপরের কথাগুলো পুনরায় পড়ুন। (শরীরের ওজন কমানোর পদ্ধতির বর্ণনা সামনে আসছে)। (ওজন কমানোর উপায়)
ওজন কমানোর উপায় নিয়ে ইসলাম কি বলে:
হালকা-পাতলা ও স্বল্পভোজী লোকদের আল্লাহ ভালবাসেন পেট ভর্তি করে খাওয়া, শরীরকে মোটা করা, বড় গ্রাসে খাওয়া দর্শকদের মনে ঘৃণা সৃষ্টি করে। নিজের শরীরের ওজনের প্রতি খেয়াল রাখবেন।
কেননা, আল্লাহ তাআলার ইবাদত-বান্দেগী করার ক্ষেত্রে সহায়তা লাভের নিয়্যতে স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবান হওয়া এবং শরীরের ওজনকে স্বাভাবিক রাখা যেমন সাওয়াবের কাজ।
তেমনি আল্লাহ তাআলা ও পরকালীন ভয়ের কারণে হালকা-পাতলা শরীরের অধিকারী হতে পারা বড়ই সৌভাগ্যের বিষয়। নবী করীম, হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লা ইরশাদ করেন:
“তোমাদের মধ্য থেকে সেই বান্দাকেই আল্লাহ তাআলা সব চেয়ে বেশি ভালবাসেন, যে বান্দা স্বল্পভোজী এবং শারীরিকভাবে হালকা পাতলা গড়নের অধিকারী।”
[আল জামিউস সগীর লিস সুয়ূতী, ২০ পৃষ্ঠা, হাদীস: ২২১]
আল্লাহ মোটা মানুষকে ভালবাসেন না:
দয়া করে আপনি নিজের প্রতি যত্নবান হোন। বিশ্বাস করুন! মোটা হওয়াটা স্বয়ং একটি মারাত্মক রোগ। এমনকি তা অসংখ্য রোগেরই কেন্দ্রস্থল। মোটা শরীর নেক কাজে বাধার সৃষ্টি করে।
(জন্মগত ভাবে মোটা লোকের কথা এখানে বলা হচ্ছে না।)
মোটা হওয়ার সবচেয়ে জঘন্য ও উদ্বেগজনক আপদের কথা বলতে গিয়ে হযরত সায়্যিদুনা ফারুকে আযম (রাঃ) বলেন: জ্ঞানী মোটা ব্যক্তিকে আল্লাহ তাআলা অপছন্দ করেন।
[আল জামউ মা'আ মাউস'আতি ইবনি আবিদ দুনিয়া, ৪র্থ খণ্ড, ৯৪ পৃষ্ঠা, হাদীস: ৮১]
কেননা, মোটা শরীর উদাসীনতা ও অতিভোজের ইঙ্গিত বহন করে। অথচ তা খুবই মন্দ। বিশেষ করে জ্ঞানীদের জন্য। (ওজন কমানোর উপায়)
মনে রাখবেন! ওলামায়ে কেরামগণ বলেন: এমন মোটা মানুষ সকলের কাছে নিন্দনীয়, যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত ভাবে (বেশি বেশি খেয়ে এবং আরাম-আয়েশ করে) মোটা শরীর গঠন করে নিয়েছে।
(জন্মগত ভাবে মোটা লোকের কথা এখানে বলা হচ্ছে না।)
[মিরকাতুল মাফাতীহ্, ১০ম খন্ড, ৩৬২ পৃষ্ঠা, হাদিস: ২১০।]
বিঃদ্র: মোটা হওয়ার কারণে কোন মুসলমানকে হাসি-ঠাট্টা করে মনে কষ্ট দেওয়া গুনাহের কাজ।
ভারী-মোটা মানুষ দেখে হাসি-ঠাট্টা করা হারাম:
যে ব্যক্তি অতিভোজে অভ্যস্ত সে অবশ্যই মোটা ও ভারী হবে। কিন্তু তাকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করা,
বরং তার দিকে তাকিয়ে মনে ব্যথা পাবে এমনভাবে হাস্য-বিদ্রূপ করা, ইশারা করা সম্পূর্ণরূপে হারাম এবং জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার মত কাজ।
আরো মনে রাখবেন! কেউ মোটা ও ভারী হওয়া মানেই কেবল বেশি বেশি আহার করার কারণে হয়েছে তা কিন্তু নাও হতে পারে।
গবেষণায় দেখা গেছে যে, কিছু কিছু ইসলামী ভাই শরীরের ওজন কমানোর জন্য ডায়েট কন্ট্রোল করা সত্ত্বেও ওজন কমাতে পারছেন না। (ওজন কমানোর উপায়)
এতে করে পরিষ্কার বুঝা যায় যে, কোন ধরনের রোগ কিংবা ঔষধের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া জনিত কারণে তাদের শরীর হয়ত ফুলে যাচ্ছে।
মোট কথা, যে কারণেই মোটা হয়ে থাকুক না কেন, তার মনে কষ্ট দেয়ার কোন অনুমতি নেই ।
ঢেকুর আসা বেশি আহার করার লক্ষণ:
ঢেকুর আসা অধিক পরিমাণে আহার করার ইঙ্গিত বহন করে। যেমন: আল্লাহর প্রিয় হাবীব, হুযুর নবী করীম হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাউকে ঢেকুর দিতে দেখে ইরশাদ করলেন:
“তোমার ঢেকুর কমিয়ে ফেল। কেননা, কিয়ামতের দিন সবচেয়ে ক্ষুধার্ত হবে সেই ব্যক্তি, যে দুনিয়াতে অধিক পরিমাণে পেট ভর্তি করে থাকে।”
[শরহুস সুন্নাহ লিল বাভী, ৭ম খন্ড, ২৯৪ পৃষ্ঠা, হাদীস: ৩৯৪৪।]
যে সাহাবীটি (আবু জুহফা ) ঢেকুর দিয়েছিলেন, তিনি বলেন: আল্লাহর কসম! যেদিন রাসুলুল্লাহ করীম হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে উক্ত ইরশাদ করেছিলেন,
সেদিন থেকে শুরু করে আজকের দিন পর্যন্ত আমি কখনো পেট ভর্তি করে আহার করি নি। আল্লাহর কাছে আমার আশা যে, তিনি আমাকে (পেট ভরে খাওয়া থেকে) আগামী দিনগুলোতেও হেফাজত করবেন। (ওজন কমানোর উপায়)
[কুতুল কুলুব, ২য় খন্ড, ২৮২ পৃষ্ঠা]
খাবারের পরিমাণ:
নবী করীম, রউফুর রহীম, হুযুর পুরনূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন:
“মানুষ নিজের পেট থেকে অধিক খারাপ আর কোন পাত্র ভর্তি করেনা।মানুষের জন্য কয়েক লোকমাই যথেষ্ট। যা তার স্বাস্থ্যকে ভাল রাখে।এটা যদি সম্ভব না হয়, তা হলে খাবারের জন্য এক তৃতীয়াংশ, পানির জন্য এক তৃতীয়াংশ এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য এক তৃতীয়াংশ ভাগ করে নেবে।”
[সুনানে ইবনে মাজাহ, ৪র্থ খন্ড, ৪৮ পৃষ্ঠা, হাদিস: ৩৩৪৯]
স্বাদ গ্রহণের জন্য বেশী আহার করা কাফিরদের লক্ষণ মনে রাখবেন! মোটা হওয়া, কেবল স্বাদের জন্য আহার করা এবং পেট ভর্তি করে আহার করা গুনাহ। অবশ্যই এসব পরিহার করা উচিত। যথা:
সদরুশ শরীয়াহ, বদরুত তরিকা হযরত আল্লামা মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ আমজাদ আলী আজমী বলেছেন:
যতটুকু ক্ষুধা রয়েছে তার চেয়ে কম খাওয়াই উচিত। ক্ষুধা পরিমাণ আহার করে নেওয়া মুবাহ্; অর্থাৎ তাতে কোন গুনাহ্ও নেই, সাওয়াবও নেই।
কেননা, এর পক্ষেও গ্রহণযোগ্য কোন উদ্দেশ্য নিহিত থাকতে পারে। যেমন: শক্তি বৃদ্ধি পাওয়া।
পক্ষান্তরে ক্ষুধার তুলনায় অধিক আহার করা হারাম। অধিক অর্থ এমন ভাবে আহার করা, যা দ্বারা পেট খারাপ হবার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়।
যেমন: ডায়রিয়া হতে পারে কিংবা মেজাজে পরিবর্তন এসে যেতে পারে।
[দুররে মুখতার, ৯ম খন্ড, ৫৬০ পৃষ্ঠা।]
তিনি আরো বলেন:
পবিত্র কুরআনে কাফিরদের বৈশিষ্ট্য ঠিক এভাবে বর্ণিত হয়েছে যে, আহার করাতে তাদের উদ্দেশ্য থাকে কেবল স্বাদ ও মজা উপভোগ করা। হাদিস শরীফেও কাফিরদের লক্ষণ স্বরূপ অতিভোজই বর্ণিত হয়েছে।
[বাহারে শরীয়াত, ৩য় খন্ড, ৩৭৫ পৃষ্ঠা]
সারা বৎসর ইবাদত করার চাইতে উত্তম কাজ নিজের নফসের বিরোধীতা করে আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জন করার উদ্দেশ্যে কম আহার করা বড়ই সৌভাগ্যের বিষয়।
উপরন্তু মনষ্কামনা মূলক চাহিদাগুলো পরিহার করার কথা তো বলাই বাহুল্য। হযরত সায়্যিদুনা আবু সোলায়মান (আঃ) বলেছেন:
“নফসের কামনা পরিহার করা অন্তরের জন্য সারা বৎসর যাবৎ রোজা রাখা ও ইবাদত করার চাইতেও অধিকতর উপকারী।”
[কুতুল কুলুব, ২য় খন্ড, ৪৯২ পৃষ্ঠা]
বেশী বেশী আহার করলে মৃত্যু যন্ত্রণাও বেশী হবে:
বর্ণিত রয়েছে:
“মৃত্যুযন্ত্রণার আধিক্য দুনিয়াবী ভোগ-বিলাস ও স্বাদ আস্বাদনের অনুরূপই হয়ে থাকে।সুতরাং যে ব্যক্তি দুনিয়ার ভোগ-বিলাস ও স্বাদ বেশী বেশী ভোগ করেছে সে ব্যক্তি চরম মৃত্যুযন্ত্রণা ভোগ করবে, কিয়ামতের দিন ক্ষুধার্ত থাকবে।”
[মিনহাজুল আবেদীন, ৯৪ পৃষ্ঠা]
নবী করীম, হুযুর পুরনূর (সাঃ) ইরশাদ করেছেন:
“দুনিয়াতে অনেক লোক বেশি খেতে চায় এবং নিরবচ্ছিন্ন ভাবে জীবন কাটাতে চায়। কিন্তু কিয়ামতের দিন তারাই ক্ষুধার্ত ও উলঙ্গ হবে।পক্ষান্তরে অসংখ্য মানুষ দুনিয়াতে ক্ষুধার্ত ও উলঙ্গ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। কিন্তু কিয়ামতের দিন তারাই পরিতৃপ্ত হবে।”
[শুআবুল ঈমান, ২য় খন্ড, ১৭০ পৃষ্ঠা, হাদীস: ১৩৬১]
কথায় আছে,
“ভূক কি নেয়ামত ভি দেয় অওর সবর কি তৌফিক দেয় ইয়া খোদা হার হাল মে তো শোকর কি তৌফিক দেয়।”
অতিভোজের কারণে গুনাহজনিত রোগ সৃষ্টি হয়:
অতিভোজের কারণে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ব্যথা সৃষ্টি হয় এবং ফ্যাসাদ সৃষ্টি সহ অযথাসব কাজ করার প্রতি আগ্রহ জনিত রোগ সৃষ্টি হয়।
কেননা, মানুষ যখন খুব পেট ভর্তি করে আহার করে, তখন তার শরীরে অহংকার এবং চোখে কুদৃষ্টির মনোভাব সৃষ্টি হয়। (ওজন কমানোর উপায়)
তার কান মন্দ কিছু শোনার প্রত্যাশায় থাকে। তার মুখ অশ্লীল কিছু কথা শুনার আশায় থাকে। তার লজ্জাস্থান বেহায়াপনার জন্য উদগ্রীব থাকে।
আর পা অবৈধ পথে চলার জন্য অস্থির থাকে। পক্ষান্তরে মানুষ যখন ক্ষুধার্ত থাকে, তখন তার শরীরের সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিস্তেজ ও শান্ত থাকে।
না সে মন্দ কোন বিষয়ে লোভ করবে, আর না মন্দ কিছু দেখে আনন্দিত হবে।
হযরত সায়্যিদুনা ওস্তাদ আবু জাফর বলেন:
পক্ষান্তরে পেট যদি ভর্তা থাকে, তবে অপরাপর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ক্ষুধার তাড়না সৃষ্টি হয়। সে তখন বিভিন্ন ধরনের মন্দ কাজের প্রতি ধাবিত হয়।
[মিনহাজুল আবেদীন, ৮৩ পৃষ্ঠা]
অতিভোজের কারণে সৃষ্টি হয় এমন ১২ প্রকারের শারীরিক জটিলতা/রোগ:
কেননা অতিভোজের কারণে লিভার নষ্ট হয়ে যায়। চিকিৎসকদের ভাষায় লিভার নষ্ট হওয়ার কারণে বিভিন্ন ধরনের রোগের সৃষ্টি হয়। তন্মধ্য থেকে ১২টি রোগের নাম নিচে দেওয়া হল।
যথা:-
১. মস্তিষ্কের সমস্যা
২. চোখের সমস্যা
৩. মুখ ও গলার সমস্যা
৪. বুক ও ফুসফুসের রোগ
৫. অর্ধাংগ জাতীয় রোগ
৬. শরীরের নিম্নভাগ অসাড় হয়ে যাওয়া
৭. সুগার (গ্লুকোস)
৮. উচ্চ রক্তচাপ
৯. মস্তিষ্কের স্নায়ু নষ্ট হয়ে যাওয়া
১০. মানসিক রোগ (অর্থাৎ পাগল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি)
১১. হার্ট ও কিডনীর সমস্যা এবং
১২. ডিপ্রেশন ইত্যাদি ।
মোটা হয়ে যাওয়া মৃত্যুর কারণ হতে পারে!
গবেষণা মতে, মোটা হওয়াটা মৃত্যুকে হাতছানি দেবারই অনুরূপ। কেননা, তা দ্বারা রক্তের মাঝে জমাট বাধতে শুরু হয়। যা শরীরের সমস্ত অংশে রক্ত সঞ্চালনের কাজে প্রভাব ফেলে।
অন্য এক গবেষণা মতে,
মিষ্টি জাতীয় খাবার এবং চর্বি ও আমিষ জাতীয় খাবার ও পানীয় কেবল শরীর মোটা হওয়া ও ওজনই বৃদ্ধি করে না বরং এর দ্বারা হার্ট ও মস্তিষ্কের সোজা ধমনীগুলোতে সঞ্চালিত হওয়া রক্তও গাঢ় হয়ে যায়।
যা হার্টে ও মস্তিষ্কের তন্ত্রীতে রক্ত বাধাপ্রাপ্ত হয়ে জীবনের হুমকি জাতীয় রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
বসে বসে কাজ করলে কি মানুষ মোটা হয়ে যায়?
ভাই কি করব, আমার কাজই হল বসে করার। তাই তো দিন দিন শরীরের ওজন বেড়ে যাচ্ছে, পেটও বেড়ে গেছে!!
এটা তাদের ভূল ধারণা। এসব লোকদের নিকট আমার আবেদন থাকবে, কোন ডাক্তারের কাছে গিয়ে মোটা অংকের ফিস দিয়ে জীবন-বিধ্বংসী কোন বড় রোগের কথা শুনে,
আধমরা হয়ে গিয়ে কম খাওয়াতে এবং শরীরের ওজন কমানোতে বাধ্য হয়ে যাওয়ার পূর্বেই সাধারণ সাদাসিধা ভোজে অভ্যস্ত হোন। তাও মনের চাহিদার চেয়ে কম।
তা হলেই আপনি অনেক ক্ষণ ধরে বসে কাজ করলেও খুবই স্মার্ট থাকতে পারবেন।
কার কতটুকু ওজন হওয়া উচিত:
সাড়ে পাঁচ ফুট উচ্চতার একজন পুরুষের স্বাভাবিক ওজন হবে ৬৬ কেজি। আর সোয়া পাঁচ ফুট উচ্চতার একজন মহিলার শরীরের স্বাভাবিক ওজন হবে ৫৯ কেজি।
শুনুন! প্রথমে রক্ত পরীক্ষা করিয়ে নিন!!
এই পরীক্ষাটির জন্য সর্বনিন্ম ১২ ঘণ্টা এবং সর্বোচ্চ ১৪ ঘণ্টা পর্যন্ত পেট খালি রাখতে হবে। সম্ভব হলে আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির নিয়্যতে রোজা রেখে সন্ধ্যার দিকে এসব টেস্ট করিয়ে নিবেন।
রিপোর্ট খারাপ এলে ডাক্তারের পরামর্শ মত ওজন কমানোর অভ্যাস গড়ে তুলবেন।
দৈনিক ৪৫ মিনিট হাটাহাটি করবেন:
এভাবে দৈনিক হাটাহাটি করবেন। তা হলে বিভিন্ন উপকার পাওয়ার পাশাপাশি শরীরের ওজনও কমে যাবে।
শরীরের ওজন কমানোর পদ্ধতি:
এক বার আহার করুন আর দুই বার করুন, অবশ্য ক্ষুধার তুলনায় কমই খাবেন। তিন বার আহার করা এমনকি দুই বারের পরে অন্যান্য সময়ে বিভিন্ন কিছু আহার করা থেকে বিরত থাকবেন।
মাঝখানে ক্ষুধা লাগলে কিংবা কিছু খেতে ইচ্ছা করলে ক্ষিরা, শশা, সালাদ, পুদিনা পাতা, ‘ডায়েট সেব' ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে।
এক বা দুই বার যে আহার করবেন তাতে সালাদের আইটেমটা রাখতে পারেন। কিংবা সিদ্ধ হওয়া তেলে কিংবা এক আধ ছোট চামচ পরিমাণ,
তেলে রান্না করা সবজি ইত্যাদি খেতে পারেন। আলু খাবেন না।
শরীরের ওজন কমানোর পদ্ধতি:
আম খেতে হলে সপ্তাহে কেবল এক আধ বার খেতে পারেন। তাও মাঝারি ধরনের। পেটের পীড়া সহ শারীরিক যে কোন ধরনের অসুস্থতা থেকে বাঁচার জন্য যে খাবারই খাবেন ভালভাবে চিবিয়ে খাবেন।
অর্থাৎ এমনভাবে চিবাবেন, যাতে করে খাবার খাদ্যনালী দিয়ে পানির মত অনায়াসে চলে যায়। চায়ে ‘এসকিম্ড মিল্ক’ দিয়ে চিনি ছাড়া পান করবেন।
আপনার যদি মিষ্টি চা না হলে না চলে, তা হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে এক কাপ চায়ে (SWEETENER) এর একটি ট্যাবলেট ব্যবহার করতে পারেন।
(কথিত আছে, কোন কোন SWEETENER স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকরও রয়েছে)।
সুগার জনিত রোগ যদি আপনার না থাকে, তবে চিনির স্থলে চায়ে মধু বা গুড় দিতে পারেন (দিনে রাতে কেবল দুই বার, মাঝারি কাপে, তাও অর্ধেক অর্ধেক করে)।
চর্বি, ঘি, ভোজ্য তেল, ডিমের কুসুম, ডায়েরীজাত দ্রব্য, যেমন: মাখন, চর্বি জাতীয় যে কোন খাবার, মিষ্টি ও ক্রীমযুক্ত বিস্কুট, বিভিন্ন ধরনের মুখরোচক মিষ্টি খাবার,
যেমন: ক্ষীর, পায়েস, ফিরনী, পুডিং ফ্রুট, কাস্টার্ড, ফালুদা ইত্যাদি খাবেন না। কেক, পেষ্ট্রি, কো-কো, চকলেট, ক্রীমযুক্ত খাদ্য দ্রব্য, মিষ্টি জাতীয় ফল, আইসক্রীম,
ঠান্ডা পানীয়, ফলের জুস, ফার্স্ট ফুড যেমন, ভাজা পরাটা, পুরি, কচড়ি, পাকোড়া, কাবাব, সমুচা, ডিম, আমলেট সহ যে কোন ধরনের এমন খাদ্য দ্রব্য যাতে ময়দা, মিষ্টি ও চর্বি রয়েছে পরিহার করে চলবেন।
তাহলে আপনার শরীরের ওজন কমে আসবে। আপনিও হয়ে উঠবেন সুন্দর ও স্মার্ট। ডাক্তারদের কাছে দৈনিক আহারের তালিকা থাকে। সেই তালিকা অনুসরণ করেও শরীরের ওজনকে আয়ত্বে রাখা যায়।
শরীরের ওজন কমানোর পদ্ধতি:
মনে রাখবেন! কোন রকম ঔষধ ব্যবহার করে ওজন কমাতে যাবেন না। কেননা, সেই ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া জনিত প্রভাব আপনার স্বাস্থ্যের জন্য বিরূপ প্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারে।
ওজন কমানোর জন্য কদু শরীফ রান্না করার নিয়ম:
কদু শরীফ থেকে কিছু না কিছু তেল বেরিয়ে আসবে। একটু পরেই ওজন কমানোর এক উন্নত মানের খাবার প্রস্তুত হয়ে যাবে। কিন্তু পূর্বে বর্ণিত নিয়মগুলোও খেয়াল রাখতে হবে ।
ওজন কমানোর আরেক পন্থা:
প্রতি দিন সকাল-সন্ধ্যায় এক চামচ করে পানির সাথে মিশিয়ে খাবারের আগে সেবন করুন। খাবারের ব্যাপারে সতর্কতাও বহাল রাখবেন।
ভয় পাবেন না!
পেটের কুফলে মদীনা অর্থাৎ স্বপ্নভোজ আপনার কাছে প্রথম প্রথম একটু কঠিন মনে হতে পারে। তাও আপনি যতক্ষণ পর্যন্ত খাবারের দস্তরখানায় থাকবেন, ততক্ষণের জন্য।
সেখান থেকে সরে আসার পর ان شاء الله عز وجل খাবারের প্রতি আপনার পূর্ব লোভ কমে যাবে। এর পর যখন পেটের কুফলে মদীনার অভ্যাস আপনার বাড়তে থাকবে,
আর সেটির বরকতগুলো যখন একটি একটি করে আপনি উপলব্ধি করতে থাকবেন, তখন এত বেশি আহার করার কথা আপনার মন থেকেই দূর হয়ে যাবে।
পাত্রে রান্না করা খাবার:
সেক্ষেত্রে মোটা ও ভারী মানুষের জন্য এসব খাদ্যদ্রব্য তো আরো বেশি ক্ষতি হবারই কথা। বরং এটা তো তাদের জন্য শত্রুই।
আমন্ত্রণের, প্রীতিভোজের বিভিন্ন মুখরোচক রুচিসম্মত খাবার গ্রহণ করার সময় স্বাদের লোভে লোকজন তাড়াতাড়ি হাত তুলে নেয় না, অভ্যাসের চেয়ে বেশিই খেয়ে থাকে,
পাশের লোকজনের সাথে পাল্লা দিয়ে বরাবর খেতেই থাকে, তাড়াতাড়ি গিলে ফেলার কারণে এবং ভালমত না চিবিয়ে খাওয়ার কারণে স্বাস্থ্যের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, চটপটি জাতীয় খাবার গ্রহণের ফলে দ্রুত আলচার সহ বদ হজমী ও অর্শ্বরোগ জন্ম নিয়ে থাকে।
আহার করেই শীঘ্রই ঘুমিয়ে পড়ার ক্ষতিকর দিক:
অতএব, আহার করার দুই কি তিন ঘণ্টা পরেই ঘুমাতে যাবেন। গভীর রাতে খেয়ে শীঘ্রই ঘুমিয়ে পড়াতে আপনার লাখো বাধ্যবাধকতা থাকুক না কেন,
রোগ আপনার সেসব বাধ্যবাধ্যকতার প্রতি এতটুকু ভ্রূক্ষেপ করবে না। আপনাকেই আপনার মন্দ পরিণতির কথাটি ভাবতে হবে।
নিত্য নতুন সকল আপডেটের জন্য জয়েন করুন
If any objections to our content, please email us directly: helptrick24bd@gmail.com