আবুল ফজলের রাজনৈতিক চিন্তাধারা

Follow Our Official Facebook Page For New Updates


Join our Telegram Channel!

প্রশ্ন ॥ আবুল ফজলের রাজনৈতিক চিন্তাধারা আলোচনা কর। অথবা, আবুল ফজলের রাজনৈতিক দর্শন সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে লিখ। অথবা, রাজতন্ত্র সম্পর্কে আবুল ফজলের ধারণা কি? | Discuss the political thought of Abul Fazl

আবুল ফজলের রাজনৈতিক চিন্তাধারা | Discuss the political thought of Abul Fazl

আবুল ফজলের রাজনৈতিক চিন্তাধারা

উত্তর : ভূমিকা : মধ্যযুগের ভারতীয় উপমহাদেশের একজন বিখ্যাত ঐতিহাসিক ছিলেন শেখ আবুল ফজল। সম্রাট আকবরের হিরোডোটাস নামে খ্যাত আবুল ফজল শুধু একজন ঐতিহাসিক হিসেবে নয়, বরং একজন বিদগ্ধ পণ্ডিত, দূরদর্শী রাজনীতিবিদ, দক্ষ প্রশাসক, রণপটু সেনাপতি, উদার ধর্মতত্ত্ববিদ ও ফলজয়ী বিশ্লেষকরূপে সুপরিচিত ছিলেন। তিনি ছিলেন আকবরের নবরত্নের একজন 


→ রাজতন্ত্র সম্পর্কে আবুল ফজলের ধারণা : আইন-ই-আকবরী গ্রন্থের শুরুতে আবুল ফজল সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রশংসা করেছেন। তারপর অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন যে, সত্যিকারের জ্ঞানী লোকের পক্ষে শুধু বাক্যেই নয়, কার্যেও আল্লাহর প্রশংসা করা উচিত এবং তাঁর হৃদয়ের দ্বার খুলে দিয়ে সৃষ্টিকর্তার আশ্চর্য গুণাবলির বর্ণনা লেখার দ্বারা নিরবচ্ছিন্ন সুখের অধিকারী হওয়া উচিত। আমি মোরাবকের পুত্র আবুল ফজল সম্রাটের প্রশংসা গান গেয়েই আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, আর তার অক্ষয় কীর্তির মুক্তাসমূহ বর্ণনা সূত্রে গেঁথে দিচ্ছি। আবুল ফজল রাজতন্ত্র সম্পর্ক যে ধারণা পোষণ করে তা নিম্নে আলোচনা করা হলো :

১. আবুল ফজল রাজতন্ত্র সম্পর্কে দৈব ধারণা পোষণ করতেন। তাঁর মতে, আল্লাহর চোখে রাজ মর্যাদার চেয়ে উচ্চ মর্যাদার আর কিছুই নেই এবং যারা বুদ্ধিমান তারা এই কল্যাণকর ঝর্ণা ধারার পানি পান করেন। এর প্রকৃষ্ট প্রমাণ হলো রাজপদ বিদ্রোহ প্রবণতার প্রতিষেধক এবং এর জন্যই প্রজাগণ অনুগত হয় । 

২. এমনকি বাদশাহ শব্দটার অর্থ এক কথার বোঝায়, কারণ 'বাদে: শব্দে স্থায়িত্ব ও অধিকার এবং উৎপত্তি, প্রভু বোঝার 'শাহ' বলতে। ফলে অধিকার ও স্থায়িত্ব মূল রাজা।

৩. আবুল ফজলের মতে, রাজপথে না থাকলে কখনও দ্বন্দ্ব বিশৃঙ্খলার অবসান হতো না বা স্বার্থপর উচ্চাকাঙ্ক্ষার নিবৃত্তি হতো না । মানবজাতি আইনশৃঙ্খলা হীনতা ও মোহ-প্রবৃত্তির চাপে পড়ে ধ্বংসের পথে যেতো। আর এই বিশাল পৃথিবী সম্পদহীন হয়ে পড়তো এবং গোটা পৃথিবী ধূসর মরুভূমিতে পরিণত হতো। কিন্তু সম্রাটের ন্যায় দণ্ডের ছত্রছাড়ায় অনেকেই সানন্দে আদেশ পালন করে চলে। অথবা অনেক শাস্তির ভয়ে দ্বন্দ্ব কলহ থেকে দূরে থেকেও বাধ্য হয়ে সত্যের পথ অনুসরণ করে। 

৪. রাজ মর্যাদা আল্লাহর নূর এবং পৃথিবী উজ্জ্বলকারী সূর্যের কিরণ আদর্শের পুস্তকের যুক্তি এবং যাবতীয় গুণের আধার।

৫. সম্রাট প্রজাদের প্রতি বাৎসল্য দেখান এবং গোষ্ঠীগত বিভেদের দ্বন্দ্ব মাথা তুলতে পারে না। সম্রাট স্থীয় বিচার বুদ্ধি দিয়ে যুগের ভাবধারা হৃদয়ঙ্গম করবেন এবং তদানুযায়ী তার নীতি নির্ধারণ করবেন।

৬. সম্রাট হবেন উদার হৃদয় সম্পন্ন, কোনো কিন্তু তার মনঃপুত না হলে তিনি তাতে বিচলিত হবেন না। পার্থক্যের অভাব হলে তিনি হতাশ হবেন না। তিনি প্রতিনিয়ত আল্লাহকে প্রকৃত কর্তা বলে মনে করেন। 

৭. আবুল ফজলের মতে, রাজা ন্যায়ের মহান আসনে অধিষ্ঠিত। তিনি বিশ্বাবাসীদের মঙ্গল সাধন, সত্যবাদীদের অনুসন্ধান করেন। তিনি রাষ্ট্রে ন্যায়বিচার বলবৎ রাখেন।

৮. তিনি প্রতিকূল অবস্থায় আল্লাহর প্রতি বিস্মৃত হবেন না। তার ইচ্ছার ব্যাপক পরিধি সত্ত্বেও তিনি অস্থির হন না অথবা অন্যায় কাজের পেছনে সময় নষ্ট করেন না। তিনি সর্বদা রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর লক্ষ রাখেন এবং তা সুস্থ রাখার জন্য কতকগুলো ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

৯. আবুল ফজল সাম্রাজ্যের লোকদের ৪টি ভাগে ভাগ করেছেন। 

যথা- 

  • যোদ্ধা, 
  • কারিগর, 
  • পণ্ডিত এবং 
  • কৃষক ও শ্রমিক। 

তাদের ভূমিকাও তিনি আলোচনা করেছেন। 

১০. সম্রাট এদের প্রত্যেককেই নিজ নিজ অধিকারের গণ্ডির মধ্যে এবং নিজের ব্যক্তিগত ক্ষমতার সাথে অন্যের প্রতি সহানুভূতি মিশিয়ে পৃথিবীতে সমৃদ্ধি ও স্বাচ্ছন্দ আনয়ন করবেন।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সম্রাট আকবরের সভাসদ ও ঐতিহাসিক আবুল ফজল একজন শ্রেষ্ঠ ইতিহাস কৌশলীর ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হন এবং রাজতন্ত্র সম্পর্কে স্বীয় মতামত পোষণ ও প্রকাশ করে বিখ্যাত হয়েছেন। আবুল ফজলের রাজনৈতিক দর্শন তার রচিত গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে।

আবুল ফজলের রাজনৈতিক চিন্তাধারা, আবুল ফজলের রাজনৈতিক চিন্তাধারা, আবুল ফজলের রাজনৈতিক চিন্তাধারা, আবুল ফজলের রাজনৈতিক চিন্তাধারা, 


নিত্য নতুন সকল আপডেটের জন্য জয়েন করুন

Telegram Group Join Now
Our Facebook Page Join Now
Class 8 Facebook Study Group Join Now
Class 7 Facebook Study Group Join Now
Class 6 Facebook Study Group Join Now

Post a Comment