awTJ8oIyB94nutbC1bJoZn5dMRTh5VC3z3VvpzU4
Bookmark

বাংলাদেশের গ্রামীণ সংস্কৃতি ও শহরের সংস্কৃতির মধ্যে পার্থক্য

বাংলাদেশের গ্রামীণ সংস্কৃতি ও শহরের সংস্কৃতির মধ্যে পার্থক্য

বাংলাদেশের গ্রামীণ সংস্কৃতি ও শহরের সংস্কৃতির মধ্যে পার্থক্য

বাংলাদেশের গ্রামীণ সংস্কৃতি ও শহরের সংস্কৃতির মধ্যে বৈসাদৃশ্য:




বাংলাদেশ গ্রামপ্রধান দেশ। এদেশের অধিকাংশ লোক গ্রামে বসবাস করে। কৃষিকে কেন্দ্র করে। কৃষকরা যেখানে বসবাস করে তাই গ্রামীণ সমাজ। গ্রামীণ সমাজ যে সংস্কৃতি লালন-পালন করে তাই গ্রামীণ সংস্কৃতি। 

আর শহরের লোকজনের আচার-আচরণ, রীতিনীতি, পোশাক-পরিচ্ছদ, কথাবার্তা মিলেই শহরের সংস্কৃতি গড়ে ওঠে। নিয়ে বাংলাদেশের গ্রামীণ সংস্কৃতি ও শহরের সংস্কৃতির মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরা হলো :


সংস্কৃতির মধ্যে পার্থক্য : 

কোন জাতির পরিচয় বহন করে সংস্কৃতি। মানুষের সৃষ্ট সব বস্তুগত ও অবস্তুগত উপাদানই সংস্কৃতি। সংস্কৃতি হলো একটি জীবনপ্রণালি। নিম্নে বাংলাদেশের গ্রামীণ সংস্কৃতি ও শহরের সংস্কৃতির মধ্যে পার্থক্য উল্লেখ করা হলো :

১. সংজ্ঞাগত পার্থক্য : 

গ্রাম এলাকায় বসবাসরত লোকের আচার-আচরণ, ধর্মীয় বিশ্বাস, জীবনপ্রণালি, রীতিনীতি নিয়ে যে সংস্কৃতি গড়ে ওঠে তাই গ্রামীণ সংস্কৃতি। অন্যদিকে, শহরের লোকজনের কথাবার্তা, আচার-আচরণ, রীতিনীতি ইত্যাদির সমন্বয়ে যে সংস্কৃতি গড়ে ওঠে তাই শহরের সংস্কৃতি। 

২. পরিবার কাঠামো :

গ্রামীণ এলাকার জনগণ যৌথ পরিবারে বসবাস করে। যৌথ পরিবার কৃষিকাজকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে। যৌথ পরিবারে পারস্পরিক বন্ধনে সদস্যরা বসবাস করে। অন্যদিকে শহরের একক পরিবার বেশি দেখা যায়। চাকরির বা অন্য কোন কারণে শহরের একক পরিবারে সংখ্যা বেশি হয়ে থাকে।

৩. পেশাগত পার্থক্য : 

গ্রামীণ সংস্কৃতির অন্যতম উপাদান কৃষি গ্রামীণ এলাকার অধিকাংশ লোক কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। গ্রামীণ এলাকায় কৃষকেরা বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করে। তা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। শহরের বিভিন্ন পেশাজীবী লোক বাস করে। চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, শ্রমিক ইত্যাদি লোক বসবাস করে থাকে।

৪. শিক্ষাগত সুযোগ সুবিধা : 

গ্রামীণ ও শহরের মধ্যে শিক্ষাগত সুযোগ সুবিধার পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। গ্রামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কম ও অনুন্নত ধরনের। গ্রামে শিক্ষা সচেতনতা কম। অন্যদিকে শহরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা অনেক। শহরে মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনেক। শহরে অল্প খরচে শিক্ষা লাভ করা যায়।

৫. পারস্পরিক সম্পর্ক : 

গ্রামীণ সমাজে জনসংখ্যার মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নত। সবাই পরস্পরের প্রতি সহনশীল। বিপদে-আপদে একজন অন্যজনকে সাহায্য-সহযোগিতা করে। শহরের লোকদের মধ্যে সম্প্রীতির ঘাটতি লক্ষ্য করা যায়। শহরের লোকজন একক সমাজে বসবাস করে, তাই তাদের পরিবারের সদস্যরা গ্রামে বসবাস করে।

৬. বিনোদনের ক্ষেত্রে :

বিনোদনের ক্ষেত্রেও গ্রামীণ ও শহরের সংস্কৃতির মধ্যে পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। গ্রামীণ লোকজন বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি অনুযায়ী পালন করে থাকে। শহরের লোকজন টিভি, সিনেমা, থিয়েটার, কনসার্ট ইত্যাদি অনুষ্ঠানে যোগদান করে থাকে।

৭. ধর্মাচারে পার্থক্য : 

গ্রামীণ মানুষ ধর্মভীরু। ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান শ্রদ্ধার সাথে পালন করে থাকে। অন্যদিকে, শহরের মানুষ ধর্মের প্রতি খুব আগ্রহী নয়। তারা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান অনুষ্ঠানভিত্তিক পালন করে থাকে। উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সংস্কৃতি একটি জীবনপ্রণালি। 

মানুষ যা কিছু করে তাই তার সংস্কৃতি। দেশ- কাল-পাত্রভেদে সংস্কৃতির তারতম্য লক্ষ্য করা যায়। গ্রামীণ সংস্কৃতির সাথে শহরের সংস্কৃতির পার্থক্য রয়েছে। গ্রাম এলাকার জনগণ সহজ সরলভাবে জীবনযাপন করেন। তাদের আচার-আচরণ, জীবনব্যবস্থা, শহরের থেকে ভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে।

উপসংহার : 

পরিশেষে বলা যায় যে, সংস্কৃতি একটি জীবনপ্রণালি। মানুষ যা কিছু করে তাই তার সংস্কৃতি। দেশ- কাল-পাত্রভেদে সংস্কৃতির তারতম্য লক্ষ্য করা যায়। গ্রামীণ সংস্কৃতির সাথে শহরের সংস্কৃতির পার্থক্য রয়েছে। 

গ্রাম এলাকার জনগণ সহজ সরলভাবে জীবনযাপন করেন। তাদের আচার-আচরণ, জীবনব্যবস্থা, শহরের থেকে ভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে।

Post a Comment

Post a Comment