Posts

বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান পদ্ধতির ধাপ ও তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি

Join our Telegram Channel!

বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান পদ্ধতির ধাপ ও তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি - Steps of scientific Inquiry method and methods of data collection

বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান পদ্ধতির ধাপ ও তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি


বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান পদ্ধতির ধাপ

ধাপ-১: বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে অনুসন্ধানের জন্য বিষয়বস্তু নির্ধারণ করা 

ধাপটির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা:

বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে অনুসন্ধানের জন্য বিষয়বস্তু নির্ধারণ করব।

উদাহরণ:

বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান পদ্ধতির ধাপ

ধাপ-২: বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে অনুসন্ধানের জন্য প্রশ্ন তৈরি করা

ধাপটির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা:

বিষয়বস্তু সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের জন্য একাধিক প্রশ্ন তৈরি করব।

উদাহরণ:

১. আমাদের এলাকার আগে রাস্তাঘাট কেমন ছিল?

২. আমাদের এলাকার বর্তমান রাস্তাঘাট এখন কেমন?


ধাপ-৩: তথ্যের উৎস নির্বাচন করা

ধাপটির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা:

বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে অনুসন্ধানের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য কোথা থেকে সংগ্রহ করতে পারি তা নির্বাচন করতে হবে।

উদাহরণ:

এলাকার রাস্তাঘাটের আগের ও বর্তমানের অবস্থা জানার জন্য এলাকার বয়স্ক লোক নির্ধারণ করব। আমরা কতজনের কাছ থেকে তথ্য নেব তা-ও নির্ধারণ করব।

এ ছাড়া বই, জার্নাল, ম্যাগাজিন, মিউজিয়াম ইত্যাদি উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে পারব।


ধাপ-৪: তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি নির্ধারণ

ধাপটির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা:

তথ্য সংগ্রহের জন্য আমরা দলীয় আলোচনা/সাক্ষাৎকার /পর্যবেক্ষণ ইত্যাদি পদ্ধতি গ্রহণ করতে পারি।

উদাহরণ:

এলাকার রাস্তাঘাটের পরিবর্তন সম্পর্কে তথ্য নেওয়ার জন্য প্রশ্নমালা তৈরি করে সাক্ষাৎকার নেওয়ার পদ্ধতি নির্ধারণ করব।


ধাপ-৫: সময় ও বাজেট নির্ধারণ

ধাপটির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা:

অনুসন্ধানী কাজ পরিচালনার জন্য আমাদের কোনো অর্থের প্রয়োজন আছে কিনা এবং কতটুকু সময় লাগতে পারে তা নির্ধারণ।

উদাহরণ:

অনুসন্ধানী কাজ পরিচালনার জন্য কোনো অর্থের প্রয়োজন হবে কি না, তা নির্ধারণ করব। যদি অর্থের প্রয়োজন হয়, নূন্যতম কত টাকার মধ্যে আমরা অনুসন্ধানী কাজটি করব, তার একটি হিসাব তৈরি করব।

অনুসন্ধানী কাজটি কত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করব তারও পরিকল্পনা করব।


ধাপ-৬: তথ্য সংগ্রহ করা

ধাপটির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা:

এই ধাপে নির্বাচিত তথ্যের উৎস ও তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি অবলম্বন করে তথ্য সংগ্রহ করব। তথ্য সংগ্রহের সময় আমরা টেপ রেকর্ডার ব্যবহার বা খাতায় নোট করে রাখতে পারি। তবে অবশ্যই তথ্যদাতার কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই এই কাজটি করতে হবে।

উদাহরণ:

এলাকার রাস্তাঘাটের পরিবর্তন সম্পর্কে তথ্য নেওয়ার জন্য বয়স্ক ব্যক্তির সাক্ষাৎকার নিয়ে প্রশ্নমালার মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করব।


ধাপ-৭: তথ্য বিশ্লেষণ করা

ধাপটির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা:

সংগৃহীত তথ্য পড়তে হয়, প্রয়োজনীয় তথ্যের মধ্যে যেগুলো প্রয়োজনীয় তথ্য তা নির্বাচন করতে হয় এবং সাজাতে হয় অথবা হিসাব নিকাশ করে গ্রাফ বা চার্ট আকারে প্রকাশ করতে হয়।

উদাহরণ:

তথ্যদাতার প্রশ্নের উত্তরের মাধ্যমে তথ্য প্রদান করেন। তিনি অপ্রাসঙ্গিক অনেক তথ্য দিতে পারেন। তাই আমরা অনুসন্ধানের বিষয়বস্তুর সঙ্গে প্রাসঙ্গিক তথ্য খুঁজে বের করে সাজাব।


ধাপ-৮: ফলাফল ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ

ধাপটির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা:

তথ্য বিশ্লেষণ করে যে উত্তর খুঁজে পাওয়া যায়, সেটাই অনুসন্ধানী পদ্ধতির ফলাফল। এই ফলাফলের ভিত্তিতে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি।

উদাহরণ:

আমরা আমাদের সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণ করে এলাকার রাস্তাঘাট আগের ও বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে যে উত্তর পাব, সেটিই হচ্ছে আমাদের অনুসন্ধানী পদ্ধতির ফলাফল। এই ফলাফলের ভিত্তিতে আমরা সিদ্ধান্ত নেব আমাদের এলাকার রাস্তাঘাটের কী রকম পরিবর্তন হয়েছে।


ধাপ-৯: ফলাফল অন্যদের সঙ্গে উপস্থাপন ও শেয়ার করা

ধাপটির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা:

আমরা আমাদের ফলাফল গ্রাফ পেপার, পোস্টার, নাটিকা, ছবি, চার্ট ইত্যাদি উপায়ে উপস্থাপন করতে পারি। এছাড়া ম্যাগাজিনে বা ক্লাসে প্রতিবেদন আকারে জমা দিতে পারি।

উদাহরণ:

আমরা আমাদের সংগৃহীত তথ্য থেকে এলাকার রাস্তাঘাট আগে কেমন ছিল এবং বর্তমানে কেমন সেটা তুলে ধরতে একটি ছোটো প্রতিবেদন লিখতে পারি। এছাড়াও ছবি এঁকে বা পোস্টারে লিখে বা ছোটো গল্প আকারে মৌখিক উপস্থাপন করতে পারি।



বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান পদ্ধতির ধাপ ও তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি

তথ্যগ্রহণের সময় করণীয়

যে ব্যক্তির কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করব, তাঁকে তথ্যদাতা বা উত্তরদাতা বলা হয়। তথ্য সংগ্রহের সময় তথ্যদাতা বা উত্তরদাতার কাছ থেকে সম্মতি নিতে হয়। যদি তথ্যদাতার বক্তব্য আমরা রেকর্ড করি, তা-ও তাঁকে সাক্ষাৎকার গ্রহণের পূর্বে বলতে হবে। তাহলে চলো, আমরা তথ্য গ্রহণের সময় করণীয় কয়েকটি নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিই।

১. অবশ্যই উত্তরদাতার কাছ থেকে সম্মতি নিতে হবে।
২. যদি তথ্যদাতার কথা রেকর্ড করতে হয়, সেটার জন্য অনুমতি নিতে হবে।
৩. তথ্যদাতার পরিচয় গোপন রাখতে হবে কিনা তা জেনে নিতে হবে।
৪. তথ্যদাতাকে জানিয়ে রাখতে হবে সংগৃহীত উত্তর শুধু তাদের এই বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান পদ্ধতিতে ব্যবহার করবে। অন্য কোনো উদ্দেশ্যে নয়।
৫. কতটুকু সময় লাগতে পারে তা উত্তরদাতাকে জানাতে হবে। তিনি সেই সময় দিতে পারবেন কি না, তা জেনে নিতে হবে।
৬. তথ্যদাতা যদি উত্তর দেওয়ার কোনো এক সময় উত্তর প্রদান করতে অনিচ্ছা প্রদর্শন করেন, সে মুহূর্তেই। প্রশ্ন করা বন্ধ করে দিতে হবে।
৭. উত্তর দাতার উত্তর ঠিক না ভুল হয়েছে এ ধরনের কোনো কথা না বলা। যেন উত্তরদাতা সম্পূর্ণ নিজের মতামত ব্যক্ত করতে পারেন।

প্রশ্নমালা তৈরি

তথ্য সংগ্রহের জন্য প্রশ্নমালা তৈরি করা যেতে পারে। যেখানে নিজ এলাকার সামাজিক উপাদান আগে কেমন ছিল এবং সামাজিক উপাদান এখন কেমন, সে বিষয়ে প্রশ্ন থাকবে। নিচে কয়েকটি প্রশ্ন সংবলিত একটি প্রশ্নমালা দেওয়া হলো

এলাকার সামাজিক উপাদানের পরিবর্তন
  • আমাদের এলাকার রাস্তাঘাট ৩০ বছর আগে কেমন ছিল?
  • আমাদের এলাকার রাস্তাঘাট এখন কেমন?
  • এলাকার বাড়িঘর ৩০ বছর আগে কেমন ছিল?
  • এলাকার বাড়িঘর এখন কেমন?
  • ------------------------------
  • ------------------------------

তথ্যে উৎস (তথ্যদাতা/উত্তরদাতা নির্ণয়)

তথ্যদাতার নির্ণয়ের সময় লক্ষ্য রাখব:
  • তথ্যদাতা প্রশ্নের উত্তর দিতে সক্ষম কি না। তিনি সেই বিষয় সম্পর্কে যথাযথভাবে জানেন কি না।
  • আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে নিজ বয়স বা আয় সম্পর্কে তথ্যদাতা উত্তর দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না। সেক্ষেত্রে আমরা সরাসরি তথ্যদাতার বয়স বা আয় জিজ্ঞেস না করে একটু কৌশলী হতে পারি। যেমন: অতীতের কোনো ঘটনা সম্পর্কে জানার জন্য ঐ সময় তথ্যদাতা কোথাও পড়াশোনা করতেন কি না, অথবা তখন তার বন্ধু বা খেলার সাথিরা কী করতেন তা জানতে পারি। এভাবে জিজ্ঞেস করে তথ্যদাতার বয়স সম্পর্কে ধারণা নিতে পারি। এ ধারণা থেকে আমরা হয়তো বুঝতে পারব, ঐতিহাসিক বিষয়ে তথ্য দেওয়ার মতো উপযুক্ত বয়স তখন তথ্যদাতার ছিল কি না।

তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি

তথ্য সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি গ্রহণ করা যায়। যেমন: সাক্ষাৎকার, দলীয় আলোচনা, পর্যবেক্ষণ ইত্যাদি। আমরা এই তিনটি পদ্ধতি সম্পর্কে জানব।

তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি


নতুন নতুন সকল আপডেটের জন্য জয়েন করুন

Post a Comment

//