৯ম শ্রেণির ইসলাম শিক্ষা অর্ধবার্ষিক মূল্যায়ন প্রশ্নের উত্তর ২০২৪ | Class 9 Islamic Studies Half yearly Exam Question Answer 2024

৯ম শ্রেণির ইসলাম শিক্ষা অর্ধবার্ষিক মূল্যায়ন প্রশ্নের উত্তর ২০২৪
নির্বাচিত সমস্যা/চ্যালেঞ্জের নাম: রাস্তায় ময়লা আবর্জনা ফেলা
সমস্যা/চ্যালেঞ্জটি সমাধানের উদ্দেশ্য:
- পরিবেশ দূষণ রোধ: ময়লা আবর্জনা জনিত পরিবেশ দূষণ রোধ করে একটি সুন্দর ও সুস্থ্য পরিবেশ গড়ে তোলা।
- সচেতনতা বৃদ্ধি: জনসাধারণের মধ্যে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং দায়িত্বশীল আচরণের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
- ধর্মীয় অনুশাসনের প্রতিফলন: ইসলামী শিক্ষার আলোকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব কে বাস্তব জীবনে প্রতিফলিত করা।
সময় (দিন/মাস): ৩ মাস (১০ ফেব্রুয়ারী - ১০ মে)
কার কার সহায়তা প্রয়োজন:
- স্থানীয় কাউন্সিলর/জনপ্রতিনিধি
- স্কুল কর্তৃপক্ষ
- এলাকার স্বেচ্ছাসেবক সংগঠন (যেমন- স্কাউট, গার্লস গাইড)
- ধর্মীয় নেতা (ইমাম, খতিব)
- এলাকাবাসী
কাজ ৩: প্রতিবেদন লিখি
ইতিবাচক উদ্যোগ: "স্থানীয় মসজিদে দারিদ্র্য বিমোচন প্রকল্প"
উদ্যোগের স্বরূপ:
ঢাকার একটি স্থানীয় মসজিদে দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য একটি বিশেষ প্রকল্প শুরু হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে এলাকার ধনী ব্যক্তিরা তাদের জাকাত ও সদকা দান করেন এবং মসজিদ কমিটি সেই অর্থ গরিব ও দারিদ্র্যপীড়িত মানুষের মধ্যে বিতরণ করে। প্রকল্পের অংশ হিসেবে দরিদ্র মানুষদের খাবার, জামা-কাপড়, ওষুধ এবং শিক্ষার জন্য উপকরণ সরবরাহ করা হয়। এছাড়াও, কর্মসংস্থানের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালিত হয় যেখানে দারিদ্র্যপীড়িত মানুষদের বিভিন্ন দক্ষতা শেখানো হয়।
উদ্যোগ গ্রহণের কারণ:
এলাকার দারিদ্র্যপীড়িত মানুষের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তাদের মৌলিক প্রয়োজন মেটানো কঠিন হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় তাদের জীবনমান উন্নয়ন এবং তাদেরকে স্বাবলম্বী করে তোলার জন্য একটি কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের প্রয়োজন ছিল। ইসলামের শিক্ষা ও নির্দেশনা অনুযায়ী, ধনীদের সম্পদে গরিবের হক রয়েছে। তাই, এই প্রকল্পের মাধ্যমে এলাকার ধনী ও গরিবের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
উদ্যোগের কার্যক্রম:
- জাকাত ও সদকা সংগ্রহ: এলাকার ধনী ব্যক্তিরা মাসিক বা বাৎসরিকভাবে তাদের জাকাত ও সদকা মসজিদের মাধ্যমে প্রদান করেন।
- সম্প্রসারণ ও বণ্টন: মসজিদ কমিটি সেই অর্থ দিয়ে গরিব ও দারিদ্র্যপীড়িত মানুষদের মাঝে প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করে।
- প্রশিক্ষণ কর্মসূচি: কর্মসংস্থানের জন্য দরিদ্র মানুষদের বিভিন্ন দক্ষতা যেমন সেলাই, কম্পিউটার, কারিগরি শিক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
- স্বাস্থ্যসেবা: বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা ও ওষুধ সরবরাহ করা হয়।
- শিক্ষা সহায়তা: দরিদ্র পরিবারের শিশুদের শিক্ষা উপকরণ ও বৃত্তি প্রদান করা হয়।
উদ্যোগের ফলাফল:
- দারিদ্র্য কমানো: অনেক পরিবার তাদের মৌলিক প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম হয়েছে।
- স্বাবলম্বিতা: প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মাধ্যমে অনেক মানুষ স্বাবলম্বী হয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে পারছে।
- স্বাস্থ্য উন্নয়ন: বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা ও ওষুধ পেয়ে দরিদ্র মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত হয়েছে।
- শিক্ষার উন্নয়ন: দরিদ্র পরিবারের শিশুরা শিক্ষার সুযোগ পেয়ে তাদের ভবিষ্যত উন্নত করতে সক্ষম হয়েছে।
- সামাজিক বন্ধন: ধনী ও গরিবের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন এবং সহমর্মিতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
ইসলামের নির্দেশনা ও বিধিবিধান:
ইসলামের শিক্ষা অনুযায়ী ধনীদের সম্পদে গরিবের হক রয়েছে এবং তাদের সেই হক আদায় করা ধনীদের দায়িত্ব। জাকাত, সদকা ও দানের মাধ্যমে সামাজিক বৈষম্য দূরীকরণ এবং গরিবদের মৌলিক প্রয়োজন মেটানো সম্ভব। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ইসলামের এই শিক্ষা বাস্তবায়ন করা হয়েছে এবং তা সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
কাজ ৪: ইসলামের বিধি-বিধান দৈনন্দিন জীবনে অনুশীলন
"রাস্তায় ময়লা আবর্জনা ফেলা" সমস্যাটি বিশ্লেষণ এবং এর সমাধানে কাজ করার মাধ্যমে আমি বুঝতে পেরেছি যে, ইসলামের বিধান কেবল আমাদের ধর্মীয় জীবনে নয়, বরং দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পালন করা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই অভিজ্ঞতা থেকে আমি আমার দৈনন্দিন জীবনে নিম্নলিখিত পরিবর্তনগুলো আনার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি:
১. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রতি আরও সচেতনতা:
পূর্বের অভ্যাস: অনেক সময় আমি হয়তো অসাবধানবশত ময়লা রাস্তায় ফেলে দিতাম অথবা ডাস্টবিন কাছে থাকলেও তা ব্যবহার করতাম না।
বর্তমান অনুশীলন: এখন থেকে আমি সবসময় ময়লা ডাস্টবিনে ফেলব এবং অন্যদেরও তা করতে উৎসাহিত করব। ডাস্টবিন না থাকলে, আমি ময়লা সাথে নিয়ে এসে বাড়িতে ফেলব। কারণ, রাস্তাঘাট পরিষ্কার রাখা আমার ধর্মীয় দায়িত্ব। হাদিসে এসেছে, "নিশ্চয়ই আল্লাহ পবিত্র এবং পবিত্র জিনিস পছন্দ করেন।" (তিরমিজি)
২. পরিবেশের প্রতি দায়িত্ববোধ:
পূর্বের অভ্যাস: পরিবেশ দূষণের বিষয়টি আগে আমার কাছে এতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল না।
বর্তমান অনুশীলন: এখন থেকে আমি পরিবেশ কে আল্লাহর আমানত হিসেবে বিবেচনা করব। ময়লা আবর্জনা ফেলার মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ করব না বরং গাছ লাগানো এবং পরিবেশ সুরক্ষায় ভূমিকা রাখব। কারণ, কুরআনে বলা হয়েছে, "তোমি কি দেখ না যে, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর যা কিছু আছে সবাই আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে।" (সূরা আস-সাফফাত, আয়াত: ১)
৩. সমাজের প্রতি দায়িত্ব পালন :
পূর্বের অভ্যাস: সমাজের সমস্যাগুলো সমাধানে আমার ভূমিকা খুব একটা স্পষ্ট ছিল না।
বর্তমান অনুশীলন: এখন থেকে আমি কেবল নিজেকে নিয়ে চিন্তা না করে সমাজের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত রাখার চেষ্টা করব। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশগ্রহণ, অন্যদের সচেতন করা, এবং এ বিষয়ে আওয়াজ তোলার মাধ্যমে একটি পরিবর্তনের অংশ হতে চাই। কারণ, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, "তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম মানুষ হলো সে যে মানুষের জন্য কল্যাণকর।" (তিরমিজি)
৪. নিজের আচরণ ও অন্যদের উৎসাহিত করা:
পূর্বের অভ্যাস: অনেক সময় অন্যদের ময়লা ফেলতে দেখেও কিছু বলতাম না।
বর্তমান অনুশীলন: এখন থেকে আমি কেবল নিজেই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকব না, বরং আমার পরিবার, বন্ধু-বান্ধব এবং প্রতিবেশীদের কে পরিবেশ পরিষ্কার রাখার জন্য উৎসাহিত করব। তাদেরকে বুঝাবো যে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা আমাদের সকলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। রাসূল (সাঃ) বলেছেন, "যে মুমিন অন্য মুমিনের প্রতি কল্যাণকর কাজে সাহায্য করে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার সাহায্য করবেন।" (মুসলিম)
৫. ধর্মীয় শিক্ষার আলোকে জীবন পরিচালনা:
পূর্বের অভ্যাস: অনেক সময় ধর্মীয় শিক্ষা কেবল আমাদের প্রার্থনা ও উপাসনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকত।
বর্তমান অনুশীলন: এই অভিজ্ঞতা আমাকে শিখিয়েছে যে ইসলাম একটি সম্পূর্ণ জীবনব্যবস্থা। এটি আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে মার্গদর্শন দান করে। তাই, আমি এখন থেকে আরও বেশি বেশি ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করব এবং সেই অনুযায়ী আমার জীবন পরিচালনা করার চেষ্টা করব।
এই পরিবর্তনগুলো আমার জীবনে একটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং আমাকে একজন ভালো মানুষ



Post a Comment