কোষের পরিভ্রমণ - ৭ম শ্রেণির বিজ্ঞান বই ৩য় অধ্যায় সকল সমাধান চিত্রসহ - Class 7 Science Book Chapter 3 all solutions

Class 7 Science Book Chapter 3
কোষ কাকে বলে?
উত্তর: কোষ হলো জীবের মৌলিক গঠনগত ও কার্যগত একক।
কোষ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আরো পড়ুন: কোষ কাকে বলে? কোষের প্রকারভেদসহ বিস্তারিত জানুন
কোষপ্রাচীর কাকে বলে?
উত্তর: প্রতিটি উদ্ভিদ কোষ সাধারণত বাইরের দিকে একটি নির্জীব জড় আবরণী দিয়ে পরিবেষ্টিত থাকে। একে কোষ প্রাচীর বলে।
কোষপ্রাচীর সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আরো পড়ুন: কোষ প্রাচীর কাকে বলে? এর গঠন ও কাজসহ বিস্তারিত জানুন
কোষ ঝিল্লি কাকে বলে?
উত্তর: সম্পুর্ণ প্রোটোপ্লাজমকে ঘিরে যে নরম পর্দা দেখা যায় তাকে কোষ ঝিল্লি বা সেল মেমব্রেন বলে।
অন্যভাবে বলা যায়,
প্রতিটি কোষ একটি সূক্ষ্ম, সজীব, স্থিতিস্থাপক ও বৈষম্যভেদ্য ঝিল্লি দিয়ে আবৃত থাকে। এ ঝিল্লিটির নামই প্লাজমা মেমব্রেন বা কোষঝিল্লি।
কোষের পরিভ্রমণ ৭ম শ্রেণির বিজ্ঞান
প্রোটোপ্লাজম কাকে বলে?
উত্তর: কোষের অভ্যন্তরের অর্ধস্বচ্ছ আঠালো এবং জেলির ন্যায় অর্ধতরল,কলয়ডালধর্মী সজীব পদার্থকে প্রোটোপ্লাজম বলে। প্রোটোপ্লাজমই কোষের তথা দেহের সকল মৌলিক জৈবিক কার্যাদি সম্পন্ন করে থাকে। এ জন্যই প্রোটোপ্লাজমকে জীবনের ভিত্তি বলা হয়। এতে ৭০ থেকে ৯০% পানি থাকে।
কোষের পরিভ্রমণ ৭ম শ্রেণির বিজ্ঞান, কোষের পরিভ্রমণ ৭ম শ্রেণির বিজ্ঞান
নিউক্লিয়াস কাকে বলে?
উত্তর: নিউক্লিয়াস (ইংরেজি: Cell Nucleus) হল প্রোটোপ্লাজমের সবচেয়ে ঘন, পর্দাঘেরা এবং প্রায় গোলাকার অংশ। যা কোষের সব জৈবনিক ক্রিয়া বিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে তাকে বলা হয় নিউক্লিয়াস ৷
সাইটোপ্লাজম কাকে বলে?
প্রোটোপ্লাজমের যে অর্ধতরল, স্বচ্ছ ও দানাদার পদার্থ , নিউক্লিও পর্দা ও কোষপর্দার মাঝখানে অবস্থান করে তাকে সাইটোপ্লাজম বলে।
কোষের পরিভ্রমণ ৭ম শ্রেণির বিজ্ঞান
গলজি বডি কাকে বলে?
উত্তর: সাইটোপ্লাজমে অবস্থিত কতকগুলো ঘনসন্নিবিষ্ট চওড়া সিস্টারনি,থলির মতো ভ্যাকুওল এবং ক্ষুদ্র ভেসিকল এর সমন্বয়ে গঠিত জটিল অঙ্গাণু হল গলজি বস্তু বা গলজি বডি।
লাইসোসোম কাকে বলে?
উত্তর: লাইসোসোম শব্দের অর্থ Lyso = হজমকারী, Somo = বস্তু। সাইটোপ্লাজমে অবস্থিত কতগুলো হাইড্রোলাইটিক এনজাইম একটি পাতলা পর্দা দিয়ে আবৃত থাকে। এদের লাইসোসোম বলে।
কোষের পরিভ্রমণ ৭ম শ্রেণির বিজ্ঞান, কোষের পরিভ্রমণ ৭ম শ্রেণির বিজ্ঞান
ক্লোরোপ্লাস্ট কাকে বলে?
উত্তর: ক্লোরোপ্লাস্ট মূলত থাকে গাছের পাতায়, কচি কান্ডের ত্বকে, ফুলের বৃতিতে এবং কচি ফলের ত্বকে। সাধারণত যে সমস্ত কোষকলাতে সালোকসংশ্লেষ হয়, সেই সব কলার কোষে প্রচুর পরিমাণে ক্লোরোপ্লাস্ট থাকে।
কোষগহ্বর কাকে বলে?
উত্তর: জীবকোষের সাইটোপ্লাজমে বিক্ষিপ্তভাবে অবস্থিত , পর্দাবৃত কোষরসপূর্ণ বা ফাঁকা গহ্বরগুলিকে কোষগহ্বর বা ভ্যাকুওল বলে।
মাইটোকন্ড্রিয়া কাকে বলে?
উত্তর: দ্বিস্তর বিশিষ্ট যে কোষীয় অঙ্গানু শ্বসন প্রক্রিয়ায় জীবকোষে শক্তি উৎপন্ন করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে তাকে মাইটোকন্ড্রিয়া বলে।
সেন্ট্রোজোম কাকে বলে?
উত্তর: সেন্ট্রিয়োল ও সেন্ট্রোস্ফিয়ার একত্র হয়ে যে সাইটোপ্লাজমীয় অঙ্গাণু গঠন করে তাকে সেন্ট্রোজোম বলে।
কোষের পরিভ্রমণ ৭ম শ্রেণির বিজ্ঞান, কোষের পরিভ্রমণ ৭ম শ্রেণির বিজ্ঞান
কোষপ্রাচীর: কোষের বাহিরের দিকে তিন স্তর বিশিষ্ট শক্ত আবরণকে বলা হয় কোষপ্রাচীর। উদ্ভিদ কোষে কোষপ্রাচীর থাকে। প্রাণীকোষে কোষপ্রাচীর থাকে না।
কোষপ্রাচীর সেলুলোজ এবং লিগনিন দিয়ে তৈরি।
কোষ ঝিল্লি: কোষের বাহিরের দিকে দুই স্তর বিশিষ্ট নমনীয় আবরণ বা পর্দা(ঝিল্লি) কে কোষ ঝিল্লি বলে। প্রাণী এবং উদ্ভিদ উভয় কোষেই কোষ ঝিল্লি থাকে।
প্রোটোপ্লাজম: কোষ প্রাচীর এবং কোষ ঝিল্লিকে অতিক্রম করে ভিতরের দিকে গেলে যে স্বচ্ছ, ঘন ও জেলির মতো বস্তু দেখা যায় তাকে বলে প্রোটোপ্লাজম। প্রোটোপ্লাজমের শতকরা ৭৫ থেকে ৯৫ ভাগ পানি।
নিউক্লিয়াস: প্রোটোপ্লাজমে অবস্থিত দ্বি-স্তরবিশিষ্ট ঝিল্লি দিয়ে ঘেরা ঘন, অস্বচ্ছ বস্তুটি হলো নিউক্লিয়াস। নিউক্লিয়াস কোষভেদে সাধারণত গোলাকার, উপবৃত্তাকার বা নলাকার হয়ে থাকে। নিউক্লিয়াস কোষের সব ধরনের কার্য কলাপের নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
"সাইট্রোপ্লাজম প্রোটিন দ্বারা গঠিত। সাইট্রোপ্রজমের মধ্যে যে অঙ্গানুগুলো থাকে তাকে বলে সাইট্রোপ্লাজমীয় অঙ্গানু।
যেমন: কোষ গহ্বর, গলজি বডি, আন্তঃপ্লাজমীয় জালিকা, সেন্ট্রোসোম, লাইসোসোম
মাইটোকন্ড্রিয়া: মাইটোকন্ড্রিয়া দুই স্তর বিশিষ্ট আবরণ বা ঝিল্লি দ্বারা আবৃত থাকে। এই ঝিল্লিটি প্রোটিন ও লিপিড দিয়ে তৈরি। উদ্ভিদ ও প্রাণী উভয় কোষে মাইটোকন্ড্রিয়া আছে।
মাইটোকন্ড্রিয়া শক্তি উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একে কোষের শক্তিঘর বা Power House বলা হয়। মাইটোকন্ড্রিয়ার ঝিল্লির বাইরের আবরণটি মসৃণ কিন্তু ভিতরের আবরণটি স্থানে স্থানে ভাঁজ হয়ে ভেতরের দিকে ঝুলে থাকে এ ভাঁজগুলোকে ক্রিস্টি বলা হয়। মাইটোকন্ড্রিয়ার ভেতরের
প্লাস্টিড: উদ্ভিদ কোষে বিভিন্ন রঞ্জক কণিকা বহনকারী অঙ্গানুগুলোকে বলা হয় প্লাস্টিড। প্লাস্টিড শুধুমাত্র উদ্ভিদ কোষেই পাওয়া যায়। প্লাস্টিড তিন প্রকার যথা- ক্রোমোপ্লাস্ট, ক্লোরোপ্লাস্ট এবং লিউকোপ্লাস্ট। সবুজ ছাড়া অন্যান্য বর্ণ যেমন লাল, হলুদ ইত্যাদি বর্ণ বহনকারী প্লাস্টিডকে ক্রোমোপ্লাস্ট বলা হয়। ফুলের পাপড়িতে ও ফলে ক্রোমোপ্লাস্ট থাকে। উদ্ভিদে বর্ণহীন যেসব প্লাস্টিড থাকে সেগুলোকে বলা হয় লিউকোপ্লাস্ট। উদ্ভিদের মাটির নিচের অংশ ভূ-নিম্নস্থ কান্ড, মূল প্রভৃতিতে লিউকোপ্লাস্ট থাকে। এরা খাদ্য সঞ্চয় করে।
উদ্ভিদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্লাস্টিড হচ্ছে ক্লোরোপ্লাস্ট। ক্লোরোপ্লাস্টে সবুজ বর্ণের ক্লোরোফিল নামের অণু থাকে। এর ফলে উদ্ভিদের পাতা ও কচি শাখা প্রশাখা সবুজ দেখায়। তাছাড়া সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়াটি সংঘটিত হয় ক্লোরোপ্লাস্টে।
কোষের পরিভ্রমণ ৭ম শ্রেণির বিজ্ঞান
প্রশ্ন: উদ্ভিদ ও প্রাণীকোষে কী কী কোষ অঙ্গাণু আছে?
উত্তর: উদ্ভিদ কোষে আছে কোষ প্রাচীর, কোষ ঝিল্লি, প্রোটোপ্লাজম, নিউক্লিয়াস, কোষ গহ্বর, গলজি বডি, আন্তঃপাজমীয় জালিকা, মাইটোকন্ড্রিয়া, প্লাস্টিড। প্রাণী কোষে আছে কোষ ঝিল্লি, প্রোটোপ্লাজম, নিউক্লিয়াস, কোষ গহ্বর, গলজি বডি, আন্তঃপ্লাজমীয় জালিকা, মাইটোকন্ড্রিয়া সেন্ট্রোসোম, লাইসোসোম ইত্যাদি।
কোষের পরিভ্রমণ ৭ম শ্রেণির বিজ্ঞান, কোষের পরিভ্রমণ ৭ম শ্রেণির বিজ্ঞান
প্রশ্ন: প্লাস্টিড, মাইটোকন্ড্রিয়া ও নিউক্লিয়াসে কী কী বিদ্যমান?
উত্তর: প্লাস্টিডে আছে বহিঃস্তর ঝিল্লি, অন্ত্যন্তর ঝিল্লি, লুমেন, গ্রানাম, স্ট্রোমা, থাইলাকয়েড ইত্যাদি।
মাইটোকন্ড্রিয়াতে আছে ক্রিস্টি, ম্যাট্রিক্স, অভ্যন্তরীণ ঝিল্লি, বাহ্যিক ঝিল্লি ইত্যাদি।
নিউক্লিয়াসে আছে নিউক্লিয়ার ঝিল্লি, ক্রোমাটিন জালিকা, নিউক্লিওলাস, নিউক্লিয়ার রন্দ্র, নিউক্লিওপ্রজমা ইত্যাদি।
উদ্ভিদকোষ ও প্রাণীকোষের মধ্যে অমিলসমূহঃ
১। উদ্ভিদ কোষে কোষগহ্বর আছে। প্রাণীকোষে নাই থাকলেও আকারে অনেক ছোট।
২। উদ্ভিদ কোষে কোষ প্রাচীর আছে, প্রাণী কোষে নাই ।
৩। উদ্ভিদ কোষে প্রাস্টিড আছে, প্রাণী কোষে নাই ।
৪। প্রাণী কোষের নিউক্লিয়াস কেন্দ্রে থাকে, উদ্ভিদকোষের ক্ষেত্রে পাশে থাকে।
৫ । প্রাণী কোষে লাইসোসোম ও সেন্ট্রোসোম আছে উদ্ভিদ কোষে নাই ।
কোষের পরিভ্রমণ ৭ম শ্রেণির বিজ্ঞান
প্রশ্ন: টিউমার কীভাবে ক্যান্সারের রূপ নিতে পারে?
উত্তর: মাইটোসিস প্রক্রিয়ায় একটি থেকে দুটি, দুটি থেকে চারটি এভাবে কোষ বিভাজন হয়। সংখ্যাবৃদ্ধি করার প্রক্রিয়ায় একটি নির্দিষ্ট পর্যায়ে কোষগুলোর মৃত্যু হয়। এভাবে জীবের কোষের সংখ্যার একটি ভারসাম্য রক্ষা হয়। কিন্তু যদি কোনো কারণে কোষের মৃত্যু না হয়, অথচ নতুন নতুন কোষ তৈরি হতেই থাকে তবে শরীরে টিউমার হতে পারে, যা এক পর্যায়ে ক্যান্সারের রূপ গ্রহণ করে।
প্রশ্নঃ জীবের স্বাভাবিক প্রজনন ও বৃদ্ধির জন্য স্বাভাবিক কোষ বিভাজন কেন গুরুত্বপূর্ণ?
উত্তর: মায়োসিস প্রক্রিয়ায় জনন কোষ তৈরি হয়। জননকোষের নির্দিষ্ট সংখ্যক ক্রোমোসোম থাকা দরকার। যদি কোনো কোষে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বা কম ক্রোমোসোম থাকে তবে এসব জনন কোষ থেকে অস্বাভাবিক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন সন্তান জন্ম নেবে। অন্যদিকে মাইটোসিস প্রক্রিয়ায় একটি থেকে দুটি, দুটি থেকে চারটি এভাবে কোষ বিভাজন হয়। সংখ্যাবৃদ্ধি করার প্রক্রিয়ায় একটি নির্দিষ্ট পর্যায়ে কোষগুলোর মৃত্যু হয়। এভাবে জীবের কোষের সংখ্যার একটি ভারসাম্য রক্ষা হয়। কিন্তু যদি কোনো কারণে কোষের মৃত্যু না হয়, অথচ নতুন নতুন কোষ তৈরি হতেই থাকে তবে শরীরে টিউমার হতে পারে, যা এক পর্যায়ে ক্যান্সারের রূপ গ্রহণ করে।
তাই বলা যায়, জীবের স্বাভাবিক প্রজনন ও বৃদ্ধির জন্য স্বাভাবিক কোষ বিভাজন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কোষের পরিভ্রমণ ৭ম শ্রেণির বিজ্ঞান
দলের সবার সাথে কাজগুলো করতে তোমাদের কেমন লেগেছে? নতুন কী শিখলে এই শিখন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে?
উত্তর: দলের সবার সাথে কাজগুলো করতে পেরে আমার খুব ভালো লেগেছে। এই শিখন অভিজ্ঞতার মধ্য থেকে জানতে পারলাম- উদ্ভিদ ও প্রাণী কোষের প্রধান অঙ্গাণুগুলোর গঠন এবং কাজ, কোষের বিভাজন ও সংখ্যা বৃদ্ধি, অস্বাভাবিক কোষ বিভাজনের পরিণতি।
চিত্রসহ প্রতিটি সংজ্ঞা ভালোভাবে বোঝার জন্য নিচের পিডিএফটি ভালোভাবে পড়ুন।
কোষের পরিভ্রমণ ৭ম শ্রেণির বিজ্ঞান, কোষের পরিভ্রমণ ৭ম শ্রেণির বিজ্ঞান
নিত্য নতুন সকল আপডেটের জন্য জয়েন করুন
If any objections to our content, please email us directly: helptrick24bd@gmail.com